কৃষিপ্রধান দেশে ঘুরে ফিরেই কৃষকদের প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি উঠে আসে পত্র-পত্রিকায়। অথচ প্রতিকার মেলে না। বীজ, কীটনাশক নিয়ে এক শ্রেণির প্রতারকদের প্রকাশ্যেই রমরমা বাণিজ্য চলে। কৃষদের অনেকেই ওদের চকচকে মোড়কে, বোতলে ভরা নানা নামের বীজ, কীটনাশক কিনে প্রতারিত হয়, হচ্ছে। যার খেসারত মূলত সমাজ তথা জাতির ঘাড়েই পড়ে। কৃষকরাই দেশবাসীর খাদ্য জোগায়।
কৃষকরা যাতে বীজ কিনে প্রতারিত না হন সে লক্ষ্যে দেশে বিধি-বিধান চালু আছে, আছে লোকবলও। এরপরএ হাট-বাজারে নিম্নমানের নকল ও নিবন্ধনহীন বীজ বিক্রি হয় কীভাবে? লোকবল সংকট? প্রতিরোধের আইন দুর্বল? অপ্রতুলতার অজুহাত সর্বক্ষেত্রেই। তারপরও সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তারা প্রভাবমুক্ত হয়ে স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালনে একটু আন্তরিক হলেও দৃশ্যপট পাল্টে যাওয়ার কথা। বাজারের সব দোকানেই কি নকল বীজ খুঁজতে যেতে হয়? অনমনীয় অভিযান তথা শক্ত পদক্ষেপই পারে বীজ কীটনাশক নিয়ে প্রতারণা রুখতে।
জনসংখ্যা বিস্ফোরণের দেশে তুলনামূলক স্বল্প আবাদি জমিতে আবাদ করেও খাদ্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের গৌরব যে জাতির, সেই জাতি কৃষিখাত থেকেই নিজেদের ভাগ্যের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। এ প্রত্যাশা অবশ্যই অমূলক নয়। শস্য সুফলা শ্যামল সুন্দর দেশের কৃষকদের তেমন প্রশিক্ষণ দেয়া না হলেও বংশ পরম্পরায় দেখাদেখি আবাদে অবিস্মরণীয় সাফল্য এনেছে। নদীমাতৃক কৃষিপ্রধান দেশে নদী বাঁচানোর পাশাপাশি কৃষকদের মাঝে কৃষি উপকরণ সহজলভ্য করতে পারলে আর্থ সামাজিক অবস্থাটা বদলে যেতে বাধ্য।
কৃষককে ঠকানো মানে জাতিকে ঠকানো। বিশেষ করে বীজ নিয়ে প্রতারণার খেসারত জাতিকে দিতে হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আবাদি জমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। অল্প জমিতে আবাদ করে আমাদের চাহিদা মেটাতে হবে। বীজ বা কীটনাশকের কারণে আবাদে ঘাটতি মানে পরনির্ভরতার ঝুঁকি বৃদ্ধি। ফলে কৃষকদের সাথে প্রতারণা রুখতে প্রয়োজনে কৃষি প্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে জবাবদিহিতা।