স্টেডিয়ামে ফ্রান্স-জার্মান ম্যাচ, বাইরে বিস্ফোরণ

মাথাভাঙ্গা মনিটর: গত শুক্রবার সন্ধ্যা। ফ্রান্সের স্টাডে ডি স্টেডিয়ামে চলছিলো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মান এবং সাবেক চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। খেলার মাত্র ১৭ মিনিট পরেই দেশটির ইতিহাসে ঘটলো এক কালো অধ্যায়। স্টেডিয়ামের বাইরে বোমার বিস্ফোরণ! কোনো দর্শকই বুঝে উঠতে পারেননি আসলে কী ঘটলো। সবার ধারণা ছিলো যেহেতু জার্মানদের সাথে ফুটবল খেলা হচ্ছে তাই হয়তো কেউ আতশবাজি ফুটাচ্ছে। তাই তারা ওলে বলে স্বাগতও জানান সেই শব্দকে।

প্রথম বিস্ফোরণের ২ মিনিট পর অর্থাৎ খেলার ১৯ মিনিটের মাথায় আবারও বিস্ফোরণ। এবার আর কারও বুঝতে বাকি রইলো না আসলে কী ঘটছে দেশটিতে। তখনো মাঠের মধ্যে ২২ জন খেলোয়াড় তাদের খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলো। তাদের মনোযোগ ছিলো খেলার দিকে। ধীরে ধীরে স্টাডে ডি স্টেডিয়ামের সবাই পরিস্থিতির মাত্রাটা বুঝতে শুরু করেছে।

বাইরে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও মাঠে কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। তবে জার্মানের বিপক্ষে প্রথম গোল করার পর আনন্দে ভেসে ওঠে স্টেডিয়াম। খেলার যখন হাফ টাইম তখন স্টেডিয়ামের ওপর দিয়ে চললো হেলিকপ্টারের টহল। স্টেডিয়ামে অবস্থান করা ৭০ হাজার দর্শকের কাছে তখন আসতে থাকে বাইরে থেকে কল এবং মেসেজ। তখন সবার কাছে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়।

খেলা দেখতে স্টেডিয়ামে আসা একজন দর্শক বলেন, আমরা স্টেডিয়ামের এক্স গেটের কাছে ছিলাম। খেলা চলার সময় আমরা দুটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। কিন্তু আমরা কিছু মনে করিনি। খেলা শেষ হবার পর বুঝতে পারলাম পরিস্থিতি শান্ত। খেলায় ফ্রান্স বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ২-০ গোলে হারালেও দর্শকদের মনে কোনো আনন্দ নেই। রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঘোষণা এলো, বাইরে বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে। আপনারা সবাই পশ্চিমের গেট দিয়ে স্টেডিয়াম ত্যাগ করুন। পরে গ্যালারির সব দর্শক মাঠের ভেতরে নেমে আসেন।

এদিকে গোল ডটকমের এক সাংবাদিক জানান, খেলা শেষ হওয়ার পর তিনি মাঠের বাইরে এসে সবার কান্না শুনতে পান। সবাই বলছে, অস্ত্রধারীরা আমাকে গুলি করছে। আমাকে বাঁচান। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লোঈ। ঘটনার পর ইংল্যান্ডের সাথে ফ্রান্সের পরবর্তী ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার ফ্রান্সের প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দেশটির ১৫৩ জন নিহত হয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ। তবে দেশটির কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে-হামলায় ১২৮ জন নিহত হয়েছে। ৮ হামলাকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনার পর প্যারিসে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এছাড়া সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।