আলেফ কবিরাজের হুমকিধামকি অব্যাহত : ফের শুরু হয়েছে অপকর্ম

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার ছয়ঘরিয়া গ্রামের বহুল সমলোচিত ভণ্ড কবিরাজ আলেফ মুন্সি স্কুলছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে দেহভোগ অতঃপর অন্তঃসত্ত্বার অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করলেও সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছে সে। স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে আলেফ মুন্সির বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করেন মামলা। এ মামলা তুলে নেয়ার জন্য আলেফ মুন্সি অব্যাহতভাবে হুমকি দিচ্ছে বাদী পক্ষকে। ভণ্ড কবিরাজ আলেফ মুন্সি জেলহাজত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে অভিনব কৌশল অবলম্বন করে তা শেষ পর্যন্ত টিকিয়ে রাখতে পারেনি। বাড়ি ফেরার ১৫ দিনের মাথায় গ্রামের কতিপয় মাতবরকে ম্যানেজ করে সালিস বসায় আলেফ মুন্সি। ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সালিমে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রীর পরিবারকে ২ লাখ টাকা দেয়ার প্রতিশ্র“তি দেয় সে। তাতে রাজি হয়নি স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। সে থেকে শুরু হয় হুমকিধামকি। দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া দক্ষিণপাড়ার নয়ন মুন্সির ছেলে আলেফ মুন্সি প্রতিবেশী কৃষকের কন্যা স্কুলছাত্রীকে জন্ডিস চিকিৎসার নামে রাত-বিরাতে ডেকে নিতো নিজ বাড়িতে। স্কুলছাত্রী অভিযোগে জানা যায়, প্রায় সন্ধ্যার পর আলেফ মুন্সি চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিতো। আলেফকে দাদা বলে ডাকতো স্কুলছাত্রী। জিন-ভুতের ভয় দেখিয়ে ৫/৬ মাস আগে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে সে। কাউকে বললে জিন-ভুত দিয়ে স্কুলছাত্রীকে মেরে ফেলার ভয় দেখাতো আলেফ মুন্সি। জ্বিন-ভুতের হাত থেকে নিজে ও বাবা-মাকে রক্ষার জন্য মুখ খুলতে সাহস না পেলেও স্কুলছাত্রীর শারীরিক পরিবর্তন দেখে বুঝে ফেলে পরিবারের লোকজন। পরিবারের পক্ষ থেকে নানা কৌশল অবলম্বন করা হলে ঘটনা খুলে বলে স্কুলছাত্রী। এ কথা ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। গত ২৯ আগস্ট রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দামুড়হুদা থানার এসআই শিকদার মনিরুল ইসলাম মনির সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় আলেফকে গ্রেফতার করেন। এদিকে আলেফ মুন্সি গ্রেফতারের ৬ দিনের মাথায় স্কুলছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানান, তার গর্ভের সন্তান মারা গেছে। গর্ভের সন্তান মরে যাওয়া নিয়ে গোটা গ্রামে শুরু হয়েছে তোলপাড়। কেউ কেউ বলেছে, চতুর আলেফ মুন্সি গ্রেফতারের বেশ আগে থেকেই গাছ-গাছালি দিয়ে তৈরি কবিরাজি ওষুধ খাইয়ে সন্তান নষ্টের অপচেষ্টা চালিয়েছে। গ্রামবাসী এ ধরনের অভিযোগ করলেও অবশেষে মুখ খুললো স্কুলছাত্রীর বাবা। স্কুলছাত্রীর বাবার অভিযোগ করে বলেছেন, আলেফ মুন্সি আমরা জানার আগেই টের পেয়েছিলো আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। যে কারণে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে গাছ-গাছালি খাইয়েছিলো আমার মেয়েকে। দেরিতে হলো আলেফ মুন্সির খায়েশ পূরণ হয়েছে। স্কুলছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে আরও বলেন, আলেফ মুন্সি মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকিধামকি অব্যাহত রেখেছে। সে কারণে চরমভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে তাদের। এ দিকে আলেফ মুন্সি ফের পুরোদমে তার প্রতারণা কার্যক্রম শুরু করেছে। ভণ্ড কবিরাজ আলেফ মুন্সিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে গ্রামবাসী।