বিদেশি টুকরো খবর

শাখারভ পুরষ্কার পেলেন সৌদি ব্লগার বাদাউয়ি

মাথাভাঙ্গা মনিটর: ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের শাখারভ মানবাধিকার পুরস্কার পেয়েছেন সৌদি আরবের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্লগার রাইফ বাদাউই। পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট মার্টিন শুলজ সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের কাছে বাদাউইকে মুক্তি দেয়ার অনুরোধ করেছেন যাতে সে  পুরস্কার গ্রহণ করতে পারে। ইসলাম অবমাননা’র অভিযোগে ২০১২ সালে ফ্রি সৌদি লিবারেলস ওয়েবসাইটের লেখক বাদাউইকে প্রকাশ্যে এক হাজার বেত্রাঘাত (দোররা) ও ১০ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি দেয়া হয়। তাকে এক লাখ ৭৫ হাজার পাউন্ড জরিমানাও করা হয়। এ বছর জানুয়ারিতে বাদাউইকে প্রথম দফায় ৫০ বার বেত্রাঘাত করা হয়। এ ঘটনায় সারা বিশ্বে নিন্দার ঝড় উঠে। পরে তার শাস্তি স্থগিত করা হয়। কিন্তু জুনে সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট রাইফের শাস্তি বহাল রেখে রায় দেয়। বাক স্বাধীনতার রক্ষক হিসেবে এ মাসের শুরুতে পেন প্রিন্টার পুরস্কারও জিতেন বাদাউই। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার লড়াইয়ে সুনির্দিষ্ট অবদানের জন্য ১৯৮৮ সাল থেকে ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট ব্যক্তি বা সংগঠনকে শাখারভ প্রাইজ ফর ফ্রিডম অব থট পুরস্কার দিয়ে আসছে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের মুক্তমনা বিজ্ঞানী আন্দ্রেই শাখারভের নামে এই পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে। বাদাউই ছাড়াও এবছর এ পুরস্কারের জন্য রাশিয়ার বিরোধী দলের নেতা বরিস নেমোৎসভ এবং ভেনেজুয়েলার বিরোধী সংগঠন মেসা দে লা ইউনিদাদ ডেমক্রাটিক মনোনয়ন পেয়েছিলো। ইউরোপীয়ান পার্লামেন্টের লিবারাল ব্লকের নেতা গাই ভেহফসটাড বলেন, ইউরোপীয়ান পার্লামেন্ট আজ সৌদি কর্তৃপক্ষকে শক্ত রাজনৈতিক ও মানবিক বার্তা পাঠিয়েছে। আমরা সৌদি আরবের মহামান্য বাদশাহ সালমানের কাছে রাইফ বাদাউইকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেছি।

এক সন্তান নীতির ইতি টানছে চীন

মাথাভাঙ্গা মনিটর: অবশেষে এক শিশু নীতি থেকে সরে এসেছে চীন। এখন থেকে চীনের দম্পতিরা চাইলে দুটি সন্তান নিতে পারবেন। চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া গতকাল বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, দেশটির জন্মহার এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে চীন সরকার এক সন্তান নীতি প্রণয়ন করে। এ নীতির আওতায় একের অধিক সন্তান নিতে পারত না চীনের পরিবারগুলো। শুধু এ নীতি করেই থেমে থাকেনি দেশটি। কঠোরভাবে পালন করার জন্য বাধ্য করা হতো জনগণকে। এ জন্য যেসব পরিবার এক সন্তান নীতি ভঙ্গ করতো তাদের জরিমানা করা হতো এমনকি চাকরি থেকেও বরখাস্ত করা হতো। ৩৬ বছর পর এক সন্তান নীতি থেকে সরে আসল বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশটি। ধারণা করা হচ্ছে চীনের এক সন্তান নীতির ফলে দেশটিতে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি জনসংখ্যা কম হয়েছে এ কয়েক বছরে। তবে দেশটির বয়স্ক মানুষেরা এ নীতি থেকে সরে আসতে অনেক দিন থেকেই চাপ দিয়ে আসছিলো সরকারকে। তবে সময়ের সাথে দেশটির কিছু কিছু রাজ্য এ নীতি শিথিল করে।

 

উত্তর মিললেই সমাধান হয় না

মাথাভাঙ্গা মনিটর: শিশুরাও ঠিকঠাক বলে দিতে পারবে: ৫×৩ = ১৫। কিন্তু কীভাবে তা হলো সেই প্রশ্নের উত্তরে যুক্তরাষ্ট্রের এক শিক্ষক নম্বর কাটায় ইন্টারনেটে শুরু হয়েছে বিতর্ক। তৃতীয় গ্রেডের এক শিক্ষার্থীর সেই উত্তরপত্রের ছবি ইমেইজ শেয়ারিং ওয়েবসাইট ইমগুরে আসার পর অভিভাবকরা আমেরিকার শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনায় মেতেছেন বলে খবর দিয়েছে যুক্তরাজ্যের টেলিগ্রাফ। একটি প্রশ্নে জানতে চাওয়া হয়েছে- পুনরাবৃত্ত যোগের কৌশলে ৫×৩ এর উত্তর কত। সেই শিক্ষার্থী খাতায় লিখেছে ৫+৫+৫=১৫। গুণফল সঠিক হলেও তার এ উত্তর ‘ভুল’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন পরীক্ষক, ফলে কাটা গেছে নম্বর। খাতায় সঠিক উত্তরটিও শিক্ষক লিখে দিয়েছেন: ৩+৩+৩+৩+৩=১৫। পরের প্রশ্নেও একই বিভ্রান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী। প্রশ্নে বলা হয়েছে- ৪×৬= কত? দাগ কেটে এঁকে দেখাও। উত্তরে পরপর ৬টি সারিতে ৪টি করে দাগ কেটেছে শিক্ষার্থী। তার নম্বর কেটে নিয়ে শিক্ষক এঁকে দেখিয়েছেন- সঠিক উত্তরে ৪টি সারিতে ৬টি করে দাগ থাকবে। গণিতের ভাষায় গুণ মানে পর্যায়ক্রমিক বা ধারাবাহিক যোগ। ৫×৩ মানে পাঁচটি ৩ এর যোগফল, অর্থাৎ ৩+৩+৩+৩+৩=১৫। এর বদলে ৫+৫+৫ লিখলেও শেষ ফল হয় সেই ১৫। কিন্তু তাতে ভুলটা হয় কৌশলে, গুণের মৌলিক গাণিতিক ধারণায়। ৪×৬ এর ক্ষেত্রেও ওই শিক্ষার্থী একই ভুল করেছে, যা শুধরে দিয়েছেন শিক্ষক। যুক্তরাষ্ট্রের গণিত শিক্ষকদের সংগঠন ‘দ্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অব টিচার্স অব ম্যাথামেটিকস’ (এনসিটিএম) এর প্রেসিডেন্ট ডায়ান ব্রায়ারস বলেন, ছাত্ররা অংক কষার সময় যাতে সমস্যাকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারে সেটাই এ শিক্ষা পদ্ধতির উদ্দেশ্য। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা যা করছে তা বুঝে করুক। কেবল উত্তর সঠিক হওয়াটাই সব নয়। তবে ফল সঠিক হওয়ার পরও কৌশলের ভুলের কথা বলে প্রাথমিক পর্যায়ের একটি শিক্ষার্থীর নম্বর কেটে নেওয়ার বিষয়টি মানতে পারছেন না অনেকে। তাদের যুক্তি, এ ধরনের শিক্ষা পদ্ধতি ছাত্রদের সৃজনশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করবে। সোশাল মিডিয়ায় একজন লিখেছেন, আমার বাচ্চার বেলায় এটি ঘটলে আমি অবশ্যই প্রতিবাদ জানাব। আরেকজন লিখেছেন, ওই শিক্ষার্থী কিন্তু সঠিক ফলেই পৌঁছেছে। সমাধানের পথ ভিন্ন হওয়ায় তাকে নিশ্চয়ই ভুল বলা যায় না। আবার উল্টো মতও এসেছে। এনসিটিএম যে যুক্তি দিয়েছে, তাকে সমর্থন দিয়েছেন অনেকে। একজন লিখেছেন, কোনো প্রশ্ন যদি সঠিক উত্তরটি নিয়ে না আসতে পারে, তাহলে বুঝতে হবে প্রশ্নেই সমস্যা আছে। ওই শিক্ষক যা করেছেন, তিনি ভালো শিক্ষক বলেই করেছেন। আর টুইটারে একজন লিখেছেন, যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা আসলে নম্বর নিয়ে, শিক্ষা পদ্ধতি নিয়ে নয়। এরই মধ্যে ২৯ লাখ মানুষ ইমগুরে ওই উত্তরপত্রের ছবি দেখেছেন।