মাথাভাঙ্গা মনিটর: কুইন্টন ডি ককের শতকে ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অতিথিদের এ জয়ে বড় অবদান রয়েছে পেসার মর্নে মর্কেলেরও। ১৮ রানের এ জয়ে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগামী বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে হবে চতুর্থ ওয়ানডে। গতকাল রোববার রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৭০ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৬ উইকেটে ২৫২ রান করে ভারত।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শিখর ধাওয়ানের সাথে ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন রোহিত শর্মা। জেপি দুমিনির করা অষ্টম ওভারে ফিরে যেতে পারতেন দু উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানই। স্কয়ার লেগে রোহিতের ক্যাচ ছাড়েন মর্কেল। আর ধাওয়ানের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি সে সময় উইকেটের পেছনে থাকা এবি ডি ভিলিয়ার্স। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ধাওয়ান (১৩)। একাদশ ওভারে মর্কেলের বলে ডি ভিলিয়ার্সের গ্লাভসবন্দি হয়ে ফিরেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে বিরাট কোহলির সাথে ৭২ রানের জুটি গড়েন রোহিত। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে প্রথম বলেই ফিরতি ক্যাচ নিয়ে তাকে ফেরান দুমিনি। ৭৪ বলে খেলা রোহিতের ৬৫ রানের ইনিংসটি সাজানো ৭টি চার ও দুটি ছক্কায়। অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির সাথে ৮০ রানের আরেকটি জুটি গড়েন কোহলি। ৬১ বলে ৪৭ রান করা ধোনিকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এ জুটি ভাঙেন মর্কেল। এরপর শূন্য রানে সুরেশ রায়না ফিরে গেলে চাপে পড়ে যায় ভারত। ম্যাচের ৪৬তম ওভারটি করতে এসে ম্যাচ পুরোপুরি দক্ষিণ আফ্রিকায় মুঠোয় নিয়ে আসেন মর্কেল। নিজের শেষ ওভারে পরপর ২ বলে কোহলি (৭৭) ও অজিঙ্কা রাহানেকে ফেরান এ পেসার। শেষ দু বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর হরভজন সিং (অপরাজিত ২০) ও অক্ষর প্যাটেল (অপরাজিত ১৫) পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন কেবল। ৩৯ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মর্কেলই দক্ষিণ আফ্রিকার সফলতম বোলার। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শুরুতেই ছিলো চমক। হাশিম আমলার জায়গায় ইনিংস উদ্বোধন করেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলার। প্রথমবারের মতো ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ডি ককের সাথে ৭২ রানের জুটি গড়েন তিনি।
চতুর্দশ ওভারে মিলারকে (৩৩) ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু এনে দেন হরভজন। এ অফস্পিনারই ফেরান ২০০৮ সালের পর প্রথমবারের মতো তিন নম্বরে নামা আমলাকে। দক্ষিণ আফ্রিকার এ ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে স্টাম্পড করে কুমার সাঙ্গাকারার সাথে ব্যবধান কমান মহেন্দ্র সিং ধোনি। ওয়ানডেতে স্টাম্পিঙের বিশ্ব রেকর্ডধারী শ্রীলঙ্কার সাঙ্গাকারার (১৩৯) ঠিক পেছনেই আছেন ভারতের অধিনায়ক ধোনি (১৩৭)। দ্রুত দু উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকা প্রতিরোধ গড়ে ফাফ দু প্লেসি ও ডি ককের ব্যাটে। ১১৮ রানের চমৎকার এক জুটি উপহার দেন এই দুই জন। দু প্লেসিকে (৬০) ফিরিয়ে মোহিত শর্মা ২০.১ ওভার স্থায়ী জুটি ভাঙার পর দিক হারায় অতিথিরা।
শতকে পৌঁছেই রান আউট হয়ে যান ডি কক। ভারতের বিপক্ষে সাত ইনিংসে এটি তার চতুর্থ শতক। এবার তিন অঙ্কে পৌঁছে ভারতের কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকারের পাশে বসেছেন তিনি। ওয়ানডেতে এক দলের বিপক্ষে সবচেয়ে কম ইনিংসে চার শতকের কৃতিত্ব ছিল কেবল টেন্ডুলকারের। কেনিয়ার বিপক্ষে ৭ ইনিংসে চারবার তিন অঙ্কে পৌঁছেছিলেন তিনি। ১১৮ বলে খেলা ডি ককের ১০৩ রানের ইনিংসটি ১১টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো। তার বিদায়ের পরপরই ফিরে যান ডি ভিলিয়ার্স (৪)। ভালো করতে পারেননি দুমিনিও (১৪)। এক সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিলো ২ উইকেটে ২০৫ রান। নিয়মিত উইকেট হারানোয় এরপর ৬৫ রানের বেশি যোগ করতে পারেনি অতিথিরা। শেষের দিকে অপরাজিত ৩৩ রানের ইনিংস খেলে দলের সংগ্রহ পৌঁনে তিনশ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান ফারহান বেহারদিন। ৬২ রানে দু উইকেট নেন ভারতের পেসার মোহিত শর্মা।