সাপে কেটে শিশু ও মধ্যবয়সী নারীর মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: ভ্যাপসা গরমে চুয়াডাঙ্গায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে। গতপরশু রাতে চুয়াডাঙ্গার গোষ্টবিহারে ৬ মাসের এক শিশু সাপে কেটে মারা গেছে। এদিকে একই রাতে চুয়াডাঙ্গা শৈলগাড়ির কাঞ্চনমালা নামের মধ্যবয়সী এক নারীর সাপে কাটলে দীর্ঘ সময় ধরে চলে ওঝা-কবিরাজের ঝাড়ফুঁক নাটক নামে অপচিকিৎসা। হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করার পরও ওঝা কবিরাজ ডেকে কাঞ্চনমালাকে বাঁচিয়ে তোলার আশায় চলে মালিশ। গুজব রটে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরানোর পর বেঁচে গেছেন তিনি। গুজবে কান দিয়ে অনেকেই শৈলগাড়ি গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বহু নাটকের পর বিকেল ৫টার দিকে দাফন কাজ সম্পন্ন হয়েছে তার।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জেলা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের গোষ্টবিহার গ্রামের ইলিয়াছ আলীর শিশুপুত্র জুনায়েত প্রতিদিনের ন্যায় মা রিক্তা খাতুনের সাথে বিছানায় ঘুমাচ্ছিলো। গভীর রাতে তাকে সাপে দংশন করলেও সে চিৎকার করেনি। সকালে তার মা তাকে ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কীভাবে তার মৃত্যু হলো প্রথমে সবার মনে প্রশ্নের দানা বাধলেও তার শরীর নীল হতে দেখে স্থানীয় অনেকেই তাকে সাপে কেটেছে বলে মন্তব্য করেছেন। পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, একমাত্র শিশুপুত্র জুনায়েত ছিলো বাবা-মার আদরের সন্তান। তাকে হারিয়ে তার পরিবারে চলছে কান্নার রোল। স্থানীয় কবরস্থানে সকাল ১০টায় তার নামাজের জানাজা শেষে দাফন কাজ শেষ করা হয়।

অপরদিকে শৈলগাড়ির রমজান আলীর স্ত্রী কাঞ্চনমালা গতপরশু রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। মধ্যরাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে জেগে ওঠেন। খাট থেকে নামতে গেলে সাপে দংশন করে। এরপরই শুরু হয় গ্রামের এক ওঝাকে যেকে ঝাড়ফুঁক নামের অপচিকিৎসা। ভোরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে উঠলে তাকে নেয়া হয় হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগী দেখেই বলেন, হাসপাতালে নিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবুও দেখা যাক, চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা যায় কি-না। চিকিৎসা শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত বাঁচানো যায়নি। সকাল ৮টার দিকে মারা যায় কাঞ্চনমালা। লাশ নিজ গ্রামে ফিরিয়ে নেয়া হলেও চলে ওঝা কবিরাজ ডেকে ঝাড়ফুঁকের নামে নানা নাটক। খবর দেয়া হয় হালসার এক নারী ওঝাকে। তিনি অবশ্য চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গায় আসেননি। এছাড়া আরো দুজন সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরা অবশ্য আশঙ্কামুক্ত। PP  Mayer Ahajari