জাহাঙ্গীর হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবিতে মানববন্ধন

জন্মভূমি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ নামলেন রাস্তায়

 

গাংনী প্রতিনিধি: বণিক বার্তার সহকারী ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) জাহাঙ্গীর আলমের (৩৮) হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তার জন্মভূমি মেহেরপুর গাংনী উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজারো প্রতিবাদী মানুষ গাংনী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনের বক্তরা দাবি করেন- হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে আটক গাংনী ফয়সাল ওরফে প্যাডি জেলা গোয়েন্দা সংস্থার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। এর আগে সে মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে বোমাবাজি করে মানুষ হত্যা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করেছে। জাহাঙ্গীর হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে অবলীলায় খুনের কথা স্বীকার করেছে। আত্মস্বীকৃত এই খুনিসহ তার সহযোগীদের ফাঁসি না হলে জাহাঙ্গীরের আত্মা শান্তি পাবে না এবং প্যাডির হাতে আরো অনেক অঘটনের আশঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা। জাহাঙ্গীরকে মেধাবী উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা না হলে এলাকা মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।

সব বক্তাদের মুখে ছিলো অভিযুক্ত ঘাতক প্যাডির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন চিত্র। তারা অভিযোগ করেন, প্যাডি শুধু গাংনীতে নয় দেশের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। গাংনী থানায় তার নামে বেশে কয়েকটি মামলা রয়েছে এবং অন্য ঘটনার সাথেও তার সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই প্যাডিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাংনী থানায় নিয়ে আসার দাবি জানান অনুষ্ঠানের বক্তারা। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে পরবর্তীতে আরো কর্মসূচি দেয়ার ইঙ্গিত দেন অনুষ্ঠানের অতিথিবৃন্দ।

বিশিষ্ট সমাজ সেবক বশির আহম্মেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহিদুজ্জামান খোকন, জেলা কৃষকলীগ সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, আওয়ামী লীগ নেতা হাজি মো. মহাসিন আলী, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান রেজা সেন্টু ও সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন। মানব বন্ধনে বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন জাহাঙ্গীর আলমের পিতা নজরুল ইসলাম। নিহত জাহাঙ্গীরের দু শিশুপুত্র ও স্ত্রীসহ তার স্বজনরাও মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নবীর উদ্দীন, আমতৈল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, যুবলীগ নেতা শফি, মিজানুর রহমান হাসু ও আনারুল ইসলাম বাবু। এর আগে পূর্বমালসাদহ গ্রাম থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ মৌন মিছিলসহ মানববন্ধন স্থলে পৌঁছান।

উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে কর্মস্থল থেকে কাওছার ঢাকার বাড্ডা এলাকায় গিয়ে নিঁখোজ হন। গভীর রাত পর্যন্ত তিনি বাসায় না ফিরলে পরিবারের পক্ষ থেকে অফিসের মাধ্যমে থানায় অবহিত করা হয়। ঘটনার পর থেকে তার মোবাইলফোনটি বন্ধ ছিলো। শুক্রবার সকালে খিলক্ষেত এলাকার নামাপাড়ার এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের পঞ্চম তলায় প্যাডির ভাড়া করা কক্ষ থেকে একটি স্যুটকেসের মধ্যে জাহাঙ্গীরের আলম কাওছারের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় প্যাডিসহ চারজনকে গ্রেফতার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।