স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে, নবায়ন করতে হলে কিংবা তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন হলে আজ মঙ্গলবার থেকে তা পুনরায় নিতে গুণতে হবে ১০০ থেকে এক হাজার টাকা। এদিকে নাগরিকদের স্মার্টকার্ড দেয়ার লক্ষ্যে চুক্তি হওয়ার পর সাড়ে সাত মাস পেরিয়ে গেলেও এ কর্মসূচির কোনো দিন তারিখ দেয়নি নির্বাচন কমিশন। ভোটারের তথ্য যাচাইয়ে সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সাথে একের পর এক চুক্তি করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ফলে নির্ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারও অঘোষিতভাবে বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে। স্মার্ট কার্ড দিতে দেরি হলেও জাতীয় পরিচয়পত্র বিনামূল্যে সংশোধনের সময় আর বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অন্তত দু মাস সময় দেয়া হয়েছে। ফি কার্যকরে বিধি মেনে প্রজ্ঞাপন ও গেজেট হয়েছে। সময় বাড়ানোর সুযোগ নেই। ১ সেপ্টেম্বর থেকে সংশোধিত লেমিনেটেড কার্ড নিতেও টাকা লাগবে। জরুরি কাজে যেকোনো কার্ড প্রয়োজন হলে নির্ধারিত ফি দিয়েই তা নিতে হবে। প্রথমবার জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকদের কোনো টাকা দিতে হয় না। এ কার্ডের মেয়াদ ১৫ বছর। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের পর জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নেও ফি দিতে হবে।
কোনো কাজে কতো টাকা লাগবে: জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়নের ফি ঠিক করা হয়েছে ১০০ টাকা। তবে জরুরিভিত্তিতে নবায়নের জন্য দিতে হবে ১৫০ টাকা। হারিয়ে ফেললে বা নষ্ট হলে নতুন পরিচয়পত্র নিতে সাধারণ সময়ের জন্য প্রথমবার আবেদনে ২০০ ও জরুরি আবেদনে ৩০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয়বার ৩০০ টাকা (সাধারণ), ৫০০ টাকা (জরুরি) এবং পরবর্তী যে কোনো বার আবেদনে ৫০০ টাকা (সাধারণ) ও জরুরি সময়ের জন্য এক হাজার টাকা ঠিক করা হয়েছে। পরিচয়পত্র হারালে বা নষ্ট হলে বিকল্প পরিচয়পত্র সংগ্রহে নির্বাচন কমিশনের পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে আবেদন করতে হয়। এক্ষেত্রে নতুন ফি কমিশন সচিব বরাবর পে-অর্ডার বা অনলাইন ব্যাংকিঙের মাধ্যমে জমা দিতে হবে।
পরিচয়পত্র সংশোধনের ফি প্রথমবার ২০০, দ্বিতীয়বার ৩০০ ও পরের যেকোনো বারের জন্য ৪০০ টাকা। এছাড়া পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনে প্রথমবার ১০০, দ্বিতীয়বার ২০০ ও পরের যে কোনো বার ৩০০ টাকা করে দিতে হবে। পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাইয়ে যেকোনো সরকারি সংস্থা ও কর্তৃপক্ষকে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে। প্রতিটি তথ্য প্রতিবার যাচাইয়ে খরচ করতে হবে দু টাকা। সরকারি সংস্থা ও বিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষকে তথ্য-উপাত্ত সরবরাহের ক্ষেত্রে এককালীন পাঁচ লাখ টাকা সার্ভিস চার্জ ধরা হয়েছে। প্রতিটি উপাত্ত সরবরাহে এক টাকা করে দিতে হবে। প্রতিবছর এক লাখ টাকায় এ সেবা নবায়ন করা যাবে।
অবশ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে ফি নিয়ে সাধারণ ও জরুরি সেবা দিতে যে প্রস্তুতি দরকার, তা ইসির নেই। কোন ব্যাংকে ফি জমা দিতে হবে, কোন বিভাগ-জেলার ভোটার কোন ডেস্কে কাজ করবেন, ওয়ান স্টপ সার্ভিস থাকবে কি-না, কল সেন্টারের সুযোগ রাখা হবে কি-না এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে- তা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনাও কর্মকর্তাদের দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বলেন, কোন ব্যাংকে, কোথায়, কীভাবে ফি জমা দেয়া যাবে তার বিস্তারিত জানিয়ে জনবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। গণমাধ্যমেও তা প্রচার করা হবে।