ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি : আরও ১৬ বাংলাদেশির মৃতদেহ উদ্ধার

 

স্টাফ রিপোর্টার: লিবীয় উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে গত বৃহস্পতিবার অন্তত ৫শ অভিবাসন প্রত্যাশী নিয়ে দুটি নৌকাডুবি ঘটনায় আরও ১৬ বাংলাদেশির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে বাংলাদেশি মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৪। নিহতদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে। যাদের বয়স যথাক্রমে ৭ বছর, ২ বছর এবং ৮ মাস। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বহিঃপ্রচার অনুবিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, ডুবে যাওয়া নৌকায় মোট ৭৮ বাংলাদেশি ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

এদিকে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হবে। গত শুক্রবার পর্যন্ত ৮ বাংলাদেশির উদ্ধারের খবর জানায় দূতাবাস। দুর্ঘটনার শিকার নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে এখনও তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন লিবিয়ার উদ্ধারকর্মীরা। গতকাল শনিবার রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে এক খবরে বলা হয়, দুটি নৌকাডুবির ঘটনায় ১১১টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত শুক্রবার ত্রাণ সংস্থাটির পক্ষ থেকে ৭৬টি মৃতদেহ উদ্ধারের খবর জানানো হয়। লিবিয়ায় রেড ক্রিসেন্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ আল মিসরাতি জানান, এখনও কয়েক ডজন অভিবাসন প্রত্যাশী নিখোঁজ রয়েছেন। ত্রাণ সংস্থাটির মতে, ডুবে যাওয়া একটি নৌকায় ৪০০ যাত্রী ছিলো। এর মধ্যে ১৯৮ জনকে উদ্ধার করা গেছে। অন্য নৌকায় যাত্রী ছিলো অন্তত ৫০ যাত্রী।

লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রমবিষয়ক কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, লিবীয় উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকা দুটিতে বিভিন্ন দেশের কয়েকশ’ অভিবাসন প্রত্যাশীর সাথে শিশু ও নারী বাংলাদেশিরা ছিলেন।

বাংলাদেশিদের লাশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের দেখতে দেয়া হয়নি। কারণ মৃতদেহ দেখার জন্য এখনও কোনো বিদেশি কূটনীতিককে সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। শুক্রবার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডুবে যাওয়া নৌকা দুটির অন্তত ২শ অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন। দুর্ঘটনার শিকার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে সিরিয়া, বাংলাদেশ ও সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের দেশগুলোর নাগরিকরা ছিলেন। বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা জানান, জীবিত উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে নারীদের বাংলাদেশ দূতাবাসের হেফাজতে নেয়া সম্ভব হয়েছে। বাকিরা ত্রিপোলি কর্তৃপক্ষের ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছে। এখন এ বাংলাদেশিদের দেশের ফেরত আনতে আইওএমের সহায়তা নেয়া হবে।

তিনি জানান, লিবিয়ার বর্তমান নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির কারণে এ বাংলাদেশিরা ইউরোপে অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

দূতাবাসের এ কর্মকর্তা বলেন, নিরাপদ ও উন্নত জীবনের আশায় লিবিয়ায় বসবাসরত বিদেশিরা আগে থেকেই ওই দেশ ছাড়ছিলেন, তবে পরিবারসহ বাংলাদেশিরা লিবিয়া ছাড়ার চেষ্টা করছেন এমনটা প্রথমবারের মতো ঘটেছে। সম্প্রতি ইউরোপ যাওয়ার পথে শ শ অভিবাসী প্রত্যাশীর মৃত্যুর ঘটনা এবং পরিস্থিতিকে সঙ্কট হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। বিশ্ব সংস্থা প্রধান বান কি মুন এ সঙ্কট মোকাবেলায় যৌথ রাজনৈতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।