স্ত্রী-সন্তানের আহার জোটাতে না পেরে শ্রমিকের আত্মহত্যা

 

স্টাফ রিপোর্টার: কয়েকদিন ওর কোনো কাজ ছিলো না। এ বাড়ি ওবাড়ি থেকে চেয়ে-চিন্তে এনে রান্না করে খেয়েছি। গত দুদিন ধরে তাও বন্ধ। এ কষ্টেই সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। এ কথা বলেই বারবার মুর্ছা যাচ্ছিলেন রুবেলের স্ত্রী লিপি আক্তার (১৮)। এ সময় তার কোলে থাকা এক বছর বয়সী শিশুকন্যা রুবিনা ছিটকে পড়ে কোল থেকে। করুন এ দৃশ্য দেখে চোখে পানি ধরে রাখতে পারেননি রাজধানীর রূপনগর ইস্টার্ন হাউজিং বালুর মাঠ সংলগ্ন দিলু মোল্লার বস্তির বাসিন্দাদের কেউ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ বস্তির একটি ঘর থেকে রাজমিস্ত্রির সহকারী রুবেলের (২২) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

লিপি জানান, দু বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। রুবেল রাজমিস্ত্রির সহকারী (জোগালে) হিসেবে কাজ করতেন। তবে প্রায় ১৫ দিন ধরে তার স্বামীর কোনো কাজ ছিলো না। প্রতিদিন কাজের জন্য এখানে-ওখানে ঘুরতেন। সন্ধ্যায় মন খারাপ করে বাসায় ফিরতেন। অনেক চেষ্টার পরও কাজ না পেয়ে রুবেল মানসিক কষ্টে ছিলেন বলে জানান লিপি। তিনি বলেন, রুবেলের উপার্জন না থাকায় গত কয়েকদিন তিনি প্রতিবেশীদের কাছ থেকে চেয়ে-চিন্তে এনে স্বামী ও মেয়েকে খাইয়েছেন। কিন্তু গত দুদিন তাদের ঘরে কোনো খাবারই ছিলো না। পরিবারের বরাত দিয়ে রূপনগর থানার এসআই আল মামুন জানান, বুধবার সকালেও রুবেল কাজের সন্ধানে বের হয়ে মধ্যরাতে বাসায় ফেরেন। ফিরে দেখেন তার স্ত্রী ও মেয়ে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। এরই এক পর্যায়ে স্ত্রী-সন্তানের আহার জোগান দিতে না পারার যন্ত্রণায় ঘরের আড়ায় রশি বেঁধে গলায় ফাঁস দেন রুবেল। সকালে ঘুম থেকে উঠে স্বামীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান লিপি। পরে স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে রুবেলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালমর্গে পাঠিয়ে দেয়।