স্টাফ রিপোর্টার: মনপুরার মেঘনায় ইলিশ মরসুমের শেষ পর্যায়ে এলেও জেলেদের জালে ইলিশের দেখা মিলছে না। ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে-আড়তদার কারো মুখে হাসি নেই। দু একটা ছোট সাইজের ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়লেও জেলে পরিবারের দুর্দিন যেন শেষ হচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে ক্রমান্বয়ে জেলেরা দায়-দেনা পরিশোধ করতে পারবে না।
ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মনপুরা রূপালী ইলিশের দেশ হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। সরকারি হিসেব মতে ৮ সহস্রাধিক জেলে হলেও প্রায় ২০ সহস্রাধিক মানুষ মাছ ধরার সাথে জড়িত রয়েছেন। প্রতিবছরই বোশেখ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময়ে এখানকার সকল স্তরের মানুষ মেঘনায় ইলিশের দিকে চেয়ে থাকে। নদীতে ইলিশ পড়লে সকল স্তরের মানুষের মুখে হাসি ফোটে। কিন্তু এ মরসুমের চার মাস অতিবাহিত হলেও জেলেদের মাঝে যেন স্বস্তি ফিরে আসছে না। কাজেই জেলে আড়তদাররা দুর্দিন পার করছেন। আড়তদাররা ইলিশের ওপর নির্ভর করে জেলেদের মাঝে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। মেঘনায় মাছ পাওয়া গেলে তা বিক্রি করলে তারা একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের কমিশন পাবেন বলে আশায় বুক বেঁধে আছেন। কিন্তু মেঘনায় ইলিশ মাছ না পড়ায় জেলে-আড়তদার কারও যেনো স্বস্তি নেই। তারা দিন দিন ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, মেঘনায় ইলিশ মাছ ধরা না পড়ায় অনেক জেলে ট্রলার ঘাটে বেঁধে রেখেছেন। আবার অনেকে পরিবারের ভরণ-পোষণ জোগাড় করার জন্য দিনমজুরের কাজ করছেন। আবার অনেক জেলে মেঘনা পাড়ে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলার হাজীর হাট ঘাটের আড়তদার মো. নিজামউদ্দিন হাওলাদার বলেন, কয়েক মাস আগ থেকেই মেঘনায় ইলিশ মাছ পাওয়ার কথা। ৪ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে কিন্তু ইলিশের দেখা নেই। সব টাকা মেঘনায় বিনিয়োগ করা হয়েছে। কখন জেলেরা নৌকা কিংবা ট্রলার ভর্তি করে মাছ নিয়ে আসবে।
উপজেলার হাজীর হাট ইউনিয়নের সোনারচর ঘাটের মোছলেহউদ্দিন মাঝি বলেন, তেল, মবিল পুড়িয়ে অনেক কষ্ট করে জীবন বাজি রেখে মেঘনায় গিয়েও কোনো ইলিশের তেমন সন্ধান মিলছে না। ৮/১০ জন মাঝির খাওয়া খরচ চালিয়ে যে খরচ হয় তাতে যে মাছ পাওয়া যায়, তাতে কোনো রকম পোষাচ্ছে না। তাই জেলেদের কষ্টের দিন অতিবাহিত করতে হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অভাব অনটনের মধ্যে জেলেরা দিনাতিপাত করছেন। মাছ না পড়ায় জেলেপাড়ায় চলছে হাহাকার। পেটের দায়ে অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।