পেট্রোল রপ্তানি করবে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার: ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের পর এবার জ্বালানি তেল রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। প্রাথমিকভাবে পেট্রোল রপ্তানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এজন্য ইতোমধ্যে দরপত্রও আহ্বান করা হয়েছে। আজ সোমবার দরপ্রস্তাব জমা দেয়ার শেষ দিন।

এ প্রসঙ্গে বিপিসির চেয়ারম্যান এএম বদরুদোজ্জা জানান, গতকাল রোববার বিকেল পর্যন্ত কোনো দরপত্র জামা পড়েনি। তবে শেষ দিন জমা পড়তে পারে বলে আশা করছেন তারা।

গ্যাসের উপজাত হিসেবে পাওয়া যায় কনডেনসেট। কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাত করে পাওয়া যায় পেট্রোল, অকটেনের মতো জ্বালানি তেল। এতোদিন দেশে উৎপাদিত এ তেল দিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদার আংশিক পূরণ হলেও, এখন কনেডেনসেটের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় দেশের চাহিদার অতিরিক্ত তেল থাকছে বিপিসির হাতে। তাই বাড়তি তেল রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

প্রথম পর্যায়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন পেট্রোল রপ্তানি করা হবে। বিপিসি বলছে, চলতি অর্থ বছর দেশের চাহিদা মিটিয়ে অন্তত দুই লাখ মেট্রিকটন পেট্রোল ও অকেটেন রপ্তানি করা যাবে।

পেট্রোবাংলার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে ৩ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন কনডেনসেট উৎপাদন হয়েছে। গত অর্থ অর্থবছরে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। চলতি অর্থ বছরে এর পরিমাণ ৫ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টনে পৌঁছাবে বলে আশা করছে পেট্রোবাংলা।

দেশের প্লান্টগুলোতে এ পরিমাণ কনডেনসেট পরিশোধনের সুযোগ থাকলেও উৎপাদিত পণ্যের পুরোটা দেশে ব্যবহারের সুযোগ নেই। দেশে পেট্রোল এবং অকটেনের সর্বোচ্চ চাহিদা সাড়ে তিন লাখ টন। গ্যাসের উৎপাদন বাড়ালে কনডেনসেটের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। এতে পেট্রোল এবং অকটেনের উৎপাদনও বাড়বে।

বাংলাদেশ ডিজেল, কেরোসিন তেল, ফার্নেস অয়েলসহ বিভিন্ন জ্বালানি তেল আমদানি করলেও ক’বছর থেকেই পেট্রোল ও জেট ফুয়েলে স্বয়ংস্বম্পূর্ণ।

দেশে এখন ১৪টি কনডেনসেট ফ্রাকসনেশন (প্রক্রিয়া) কারখানা রয়েছে। এরমধ্যে পেট্রোবাংলার অধীনে তিনটি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ইস্টার্ন রিফাইনারি (ইআরএল) এবং বেসরকারি পর্যায়ে ১০টি কারখানা রয়েছে।

সরকারি চারটি কারখানা এসজিএফএল, বিজিএফসিএল, আরপিজিসিএল ও ইআরএল এর পরিশোধন ক্ষমতা ৩ লাখ ২৮ হাজার ৬৬৪ মেট্রিক টনকনডেনসেট। এ চারটি প্রতিষ্ঠান গত এপ্রিল পর্যন্ত ২ লাখ ১১ হাজার ৩৪৫ মেট্রিক টন পরিশোধন করেছে। অন্যদিকে ১০টি বেসরকারি কোম্পানির ক্ষমতা রয়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৬৬৪ মেট্রিক। তবে তারা গত এপ্রিল পর্যন্ত পরিশোধন করেছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৭৯৫ মেট্রিক টন।

চাহিদা না থাকায় পরিশোধন কেন্দ্রগুলো সব কনডেনসেট প্রক্রিয়াজাত করে না। এখন দেশে দিনে গড়ে ১ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন কনডেনেসেট উৎপাদিত হয়। তবে পরিশোধন কর হয় দৈনিক এক হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ মেট্রিক কনডেনসেট। বাকিটা পুড়িয়ে ফেলতে হচ্ছে। কারণ দেশের পরিশোধন কারখানা ও গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে কনডেনসেট জমা রাখার ক্ষমতা সীমিত। অতিরিক্ত কনেডেনসেট পুড়িয়ে না ফেললে গ্যাস উত্তোলনই বাধাগ্রস্ত হবে।

আশুগঞ্জে কনডেনসেট ট্যাংকারে ধারণক্ষমতা প্রায় ৭১ হাজার মেট্রিক টন। এ পরিমাণ কনডেনেসেট এখানে প্রায় সব সময় মজুদ রাখতে হচ্ছে। ফলে বিবিয়ানা থেকে উত্তোলিত কনডেনসেট সেখানে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে বিবিয়ানা ক্ষেত্রের গ্যাসের উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে।