সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির জাতীয় প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা ও বেতন স্কেল উন্নীত করার দাবি জানিয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি। গত শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসকাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক রিয়াজ পারভেজ এ দাবি জানান। কেন্দ্রীয় সংগঠনের এ সংবাদ সম্মেলনে ৮ বিভাগ থেকে প্রধান শিক্ষকগণ প্রতিনিধিত্ব করেন। খুলনা বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করেন খুলনা বিভাগের আহ্বায়ক চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বরূপ দাস, খুলনা সদর থেকে জেলা আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, কয়রা উপজেলার লস্কর মাহফুজুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে রিয়াজ পারভেজ বলেন, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক ঘোষণার মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়। একই সাথে বেতন স্কেলও উন্নীত করা হয়। কিন্তু গত দেড় বছরেও প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাস্তবায়ন হয়নি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গড়িমসির কারণে প্রধান শিক্ষকদের পদমর্যাদা বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রিয়াজ পারভেজ বলেন, গেজেট প্রকাশ না করা ও করেসপন্ডিং স্কেলে বেতন নির্ধারণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় বেতন নির্ধারণ করতে পারছে না হিসাবরক্ষণ অফিস। যে কারণে প্রধান শিক্ষকরা তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন বিলের মাধ্যমে আগের মতোয় পুরোনো স্কেলে বেতন ভাতা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান। মন্ত্রণালয় নিম্ন গ্রেডে স্কেল নির্ধারণ করে বৈষম্য করছে অভিযোগ করে এ শিক্ষক নেতা বলেন, উন্নীত বেতন স্কেলে বৈষম্য করায় ও উন্নীত পদমর্যাদা দীর্ঘ দেড় বছরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা চরম হতাশ। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে তিনি মনে করেন। এ ধরনের বৈষম্য থাকলে মেধাবী ও উচ্চশিতিরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় আগ্রহী হবেন না বলে তিনি মনে করেন। অবিলম্বে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিকদের পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর হস্তপে কামনা করেছে শিকদের এ সংগঠনটি।
স্বরুপ দাস বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা যে যোগ্যতা নিয়ে চাকরিতে ঢোকেন আমরাও সে যোগ্যতা নিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করি। তাই তাদের বেতন স্কেল ৮ হাজার টাকা হলে আমাদেরও বেতন স্কেল ৮ হাজার টাকা দিতে হবে। তাছাড়া প্রথম নিয়োগের সময় একজন প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল হবে পাঁচ হাজার ৯শ টাকা। অথচ প্রধান শিক্ষকদের মতো দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদাপ্রাপ্ত পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই), নার্স, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা দশম গ্রেডে আট হাজার টাকার স্কেল পেয়েছেন। উন্নীত বেতন স্কেলে বৈষম্য করায় এবং উন্নীত পদমর্যাদা দীর্ঘ দেড় বছরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা চরম হতাশ। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
শিক্ষকদের এই দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে ৬ আগস্ট বিকেলে সব জেলায় একযোগে জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিকদের ওই সব দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা বলেছেন রিয়াজ পারভেজ।