শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কিছুক্ষণ -ডক্টর মো. আব্দুর রশীদ

বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে যেসব মন্ত্রীকে সফল হিসেবে বিবেচনা করা হয়; তাদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কথা সবার ওপরে উঠে আসে। তার সদা বিনয়ী ব্যবহার, শিক্ষার জন্য কর্মপরিকল্পনা, কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা সবাইকেই আকর্ষণ করে। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে- ঝরে যাওয়া ছেলেমেয়েদের সংখ্যা কমিয়ে আনা, বিশেষ করে বছরের শুরুতেই পাঠ্যপুস্তুক বিতরণ, একটি মানসম্মত শিক্ষা কৌশল গ্রহণ, সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির প্রবর্তন, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান, শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনের জন্য গুণগত শিক্ষক তৈরিতে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। তার সাথে ইতঃপূর্বে অনেকবার দেখা হলেও কথা বলার সুযোগ কখনো আসেনি। গত ৯ জুন জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিতে (নায়েম) তার সাথে আমার সাক্ষাতের সুযোগ ঘটে ‘২২তম অফিস ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ কোর্সে’। তার তথ্যপূর্ণ বক্তব্য এবং সরল স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বর্তমান বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি সার্বিক চিত্র পাওয়া যায়। তিনি সেদিন যা বললেন তাতে শিক্ষকদের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসার কথাই প্রকাশ পেলো। তিনি বললেন, ‘আমি ইচ্ছা করলেই এখন শিক্ষক হতে পারবো না, তবে একজন শিক্ষক ইচ্ছে করলেই আগামীতে মন্ত্রী হতে পারেন, এমনকি একাধিক মন্ত্রীও তাদের হাত ধরে তৈরি হতে পারে।’ তার এ-কথাতে মনে পড়ে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বিখ্যাত সেই উক্তি: ‘শেক্সপীয়র ইচ্ছা করলে নিউটন হতে পারে, কিন্তু নিউটন কখনো শেক্সপীয়র হতে পারবে না।’ শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, ‘একজন শিক্ষক একজন ছাত্রের কাছে আদর্শ স্বরূপ। তাই কয়েকজন শিক্ষক নামধারী মানুষের জন্য শিক্ষকদের সুনাম যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। কারণ, আগামীতে যারা এই জাতিকে নেতৃত্ব দেবে, তাদের গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষকদের।’ তার কথাতে বোঝা গেলো তিনি এবার শিক্ষার হারবৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বজন স্বীকৃত একটি মানসম্মত শিক্ষাব্যবস্থার একটি স্থায়ী রূপ দেয়ার কথা ভাবছেন। তবে একটি কথাই উল্লেখ না করলেই নয়; তাকে নিয়ে কেউ প্রশংসা করলেই সেখানে তিনি তাকে থামিয়ে দিচ্ছিলেন। বোঝা গেলো এদেশে এমন মানুষও আছেন, যিনি নিজের প্রশংসা শুনতে অপছন্দ করেন।

 

সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ, চুয়াডাঙ্গা