অতি গভীর নিম্নচাপ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা

 

ষড়ঋতুর দেশ। চলছে বর্ষাকাল। বৃষ্টি হওয়ায় স্বাভাবিক। পানি জমবে এবং দুর্যোগের ঘনঘটা বাড়বে এটাও স্বাভাবিক। প্রাকৃতিক কারণেই কোনোবার বর্ষায় বৃষ্টির আধিক্য থাকে, কোনোবার তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাত হয়। চরম এ বাস্তবতা অস্বীকার করার জো নেই। যদিও বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে চিরাচরিত প্রকৃতি পূর্বের তুলনায় অনেক বেশি খামখেয়ালি হয়ে উঠেছে। এ সমস্যা আরও বাড়বে বৈ কমবে না বলেই অভিমত গবেষকদের।

বর্ষার অবিশ্রান্ত ঢলে বাংলার গ্রাম, নগর, মহানগর- সবখানেই জনসাধারণকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এবারের বর্ষাও গত কয়েক সপ্তাহে প্রবলপ্রতাপে দেশজুড়ে অহর্নিশ ঝরছে। লঘুচাপের প্রভাবে এ অঝরধারায় এক দেড় সপ্তাহজুড়ে দেশের লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা জলের নিচে তলিয়ে যায়। পার্বত্য এলাকার অবস্থাও কম ভয়াবহ হয়নি।

সর্বশেষ আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সর্বশেষ নিম্নচাপটি সাগরের মধ্যে স্থিত হয়ে গত কয়েকদিনে প্রবল শক্তি সঞ্চয় করেছে। আরেকটি নিম্নচাপের অক্ষরেখায় পেড়ে এ নিম্নচাপটি স্থির থেকে সম্প্রতি যে শক্তি সঞ্চয় করেছে, তা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে অতি গভীর নিম্নচাপ হয়ে মহাবিপত্তি ঘটাতে পারে। এমনকি নিম্নচাপটি কিছুক্ষণ ঘূর্ণিঝড়েরও রূপধারণ করতে পারে। তবে ভয়টা যতো না ঝড়ের তার চেয়ে ঢের বেশি প্রবল বর্ষণের। ইতোমধ্যেই আবহওয়া অধিদফতর দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ৪নং বিপদ সঙ্কেত দেখাতে বলেছে। ভারী বর্ষণ মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়ারও তাগিদ অভিজ্ঞমহলের।

বর্ষায় মরসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় থাকে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের শত নদীর দু কূল উপচে বানে ভাসায়। বর্ষায় স্কুল-কলেজ, বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জনজীবনকে যেভাবে স্থবির করে তোলে, তার প্রশমন ঘটাতে আগাম প্রস্তুতি থাকলে ক্ষতির মাত্রা হ্রাস পাবে। যেহেতু ষড়ঋতুর দেশ, সেহেতু রকমারি প্রকৃতির বিপর্যয় মোকাবেলার শক্তি ও কৌশল সাধারণ মানুষকে আয়ত্ত করতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।