খুন করে রুবেলের ফোন

স্টাফ রিপোর্টার: ২৬ জুন, রাত ১২টা ১৬ মিনিট। তাসমিন খাদিজা সোনিয়ার মোবাইলফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে প্রেমিক রুবেল তাকে জানায়, ‘অপারেশন সাকসেস।’ রাজধানীর কলাবাগানে ওবায়দুল হাসানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর সাইফুল হাসান রুবেল প্রথম সংবাদটি দেয় সোনিয়াকে। রুবেল বলে, ‘আমার মোবাইলফোনটি কিছুদিন বন্ধ থাকবে। আমাকে খোঁজার দরকার নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমি নিজেই যোগাযোগ করব।’ ওই দিনের পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত রুবেলের মোবাইলফোনটি বন্ধ রয়েছে। ২৬ জুন ঘটনার আগে রাত ১১টা ২৫ মিনিটে রুবেল মোবাইলফোনে সোনিয়াকে বলে, ‘প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করছি। ওরা আর অপেক্ষা করতে চাচ্ছে না। তুমি বললে অন্য কোনোদিন ঠিক করি।’ জবাবে সোনিয়া রুবেলকে বলে, ‘আমি আর পারছি না, যা করার আজকেই করতে হবে। আর যদি না পার, তাহলে কাল আমার মৃত্যু সংবাদ পাবে।’ সানোয়ারা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান সাব-জিরো (কোয়ালিটি) আইসক্রিম পার্লারের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ওবায়দুল হাসানকে খুন করার আগে সোনিয়ার সাথে রুবেল মোবাইলফোনে ১৩ বার কথা বলেন। রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১২টা ১৬ মিনিট পর্যন্ত দুজনের এসব টেলিকথোপকথনের রেকর্ড এখন গোয়েন্দাদের হাতে। সোনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে ওবায়দুলকে ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে হত্যার পরিকল্পনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী সোনিয়াকে বুধবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়। নিহত ওবায়দুল হাসান প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম বিএসসির ভাগ্নে।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, পান্থপথের বসুন্ধরা সিটি শপিংমলের অফিস থেকে প্রায় প্রতিদিনই রাত ১০টার মধ্যে বাসায় ফিরতেন ওবায়দুল হাসান। সে হিসেবে রাত ৯টার কিছু আগে ওই শপিংমলের সামনে অবস্থান নেয় ঘাতকরা। পরে রুবেল ওই শপিংমলের সামনে তার ভাগ্নে মিঠুকে রেখে মোটরসাইকেলে করে পাপ্পু ও তানভীরকে নিয়ে কলাবাগানে ৫৭, সার্কুলার রোডে (ভূতের গলি) ওবায়দুল হাসানের বাসার অদূরে অপেক্ষা করতে থাকে। রাত ১২টার দিকে রিকশাযোগে ফেরার পথে ওত পেতে থাকা ঘাতকদের গুলিতে খুন হন ওবায়দুল হাসান। মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রুবেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক থাকার কথা স্বীকার করেছেন সোনিয়া। স্বামীকে হত্যার বিষয়ে তার সাই ছিলো।