সাকার রায়ের আগে ধারাবাহিক কর্মসূচি শাহবাগে

স্টাফ রিপোটার: সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর চূড়ান্ত রায়ের আগে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে নামছে গণজাগরণ মঞ্চ, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে দু বছর আগে যাদের আন্দোলন বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছিলো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতার পাশাপাশি নিরীহ মানুষ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত এ বিএনপি নেতার আপিলের রায় আগামী ২৯ জুলাই দেবেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। সাবেক এই মন্ত্রী এবং দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের এই নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায় যেন কোনোভাবে ঘুরে না যায়, সেই লক্ষ্যে শুক্রবার থেকে ধারাবাহিক কর্মসূচি বলে জানিয়েছেন মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।

যুদ্ধাপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৩ এর ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এর আগে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ আপিলের রায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডে নেমে এসেছিলো জামায়াতে ইসলামীর নায়েব আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ক্ষেত্রে, যিনিও সংসদ সদস্য ছিলেন। ইমরান বৃহস্পতিবার বলেন, সম্প্রতি একটি বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে ইতোমধ্যে তার পরিবারের সদস্যরা প্রধান বিচারপতির সাথে দেখা করেছেন। সে একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা। তার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক লবিংও যথেষ্ট শক্তিশালী। এই বিষয়গুলো রায়ের ক্ষেত্রে আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কি-না- এ বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ও শঙ্কার অবকাশ আছে। আগেও বিভিন্ন সময় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালকে বিতর্কিত করতে সালাউদ্দিন কাদেরের চেষ্টার ঘটনাগুলো তুলে ধরে ইমরান বলেন, তার এই রায়কে কেন্দ্র করে স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠীর সব ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সব মানুষকে আমি রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধই হবে সব ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব।

মঞ্চের মুখপাত্র জানান, ২৪ জুলাই শুক্রবার থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তা শুরু হবে শুক্রবার বিকালে শাহবাগে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচির মধ্যদিয়ে। শুক্রবার অবস্থান থেকেই পরবর্তী কর্মসূচিগুলো জানানো হবে বলে জানান তিনি। ইমরান বলেন, এ পর্যন্ত যতোজন যুদ্ধাপরাধীর বিচার এবং সাজা হয়েছে, তাদের মধ্যে সাকা চৌধুরী সবচেয়ে ভয়াবহ ও নৃশংস। সাকা চৌধুরীর নেতৃত্বেই একাত্তরে চট্টগ্রামে গণহত্যার মহোৎসব চলে। একাত্তরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যতো যুদ্ধাপরাধ হয়েছে, তার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা ইতোমধ্যে প্রমাণিত।

একাত্তরে চট্টগ্রামের রাউজানে কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের মালিক নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যা, সুলতানপুর ও ঊনসত্তরপাড়ায় হিন্দু বসতিতে গণহত্যা এবং হাটহাজারীর এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ছেলেকে অপহরণ করে খুনের দায়ে ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সালাউদ্দিন কাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর গ্রেফতরের পর প্রায় তিন বছর বিচারের পরিক্রমায় এই রায় হয়। তার ওই রায় আগেই ফাঁস করার অভিযোগেও একটি মামলা রয়েছে, যাতে তার স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী এবং ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী আসামি।