ঝিনাইদহে মুক্তিপণের দাবিতে শিশু অপহরণ ও হত্যাকাণ্ড : মূল হোতা আবু জাফর ধরা না পড়ায় ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহ সদরের অচিন্তনগর গ্রামে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণের ৫ দিন পর ৫ বছরের কন্যা শিশু মনিরা খাতুনকে নির্মমভাবে হত্যাকাণ্ডের ১৩ দিন পার হয়েছে। পুলিশ ৩ জনকে আটক করলেও মূল হোতা আবু জাফর আটক না হওয়ায় নিহতের স্বজনেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মনিরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসিসহ মানবাধিকার ও সাংস্কৃতিক সংঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফুঁসে উঠেছে।

নিহতের পিতা রমজান আলী ও সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল জানান, সদর উপজেলার অচিন্তনগর গ্রামের রমজান আলীর ৫ বছর বয়সী শিশু মনিরা খাতুন গত ৭ জুলাই দুপুরে বাড়ির বাইরে খেলা করছিলো। এ সময় প্রতিবেশি জিহাদসহ কয়েকজন যোগসাজশ করে মজিবর নামে এক ব্যক্তির স্ত্রী নুপুরের হাতে তুলে দেয়। নুপুর তাকে আবু জাফর নামে মূল অপহরণকারীর কাছে তুলে দেয়। এর পর ওইদিন রাতেই মনিরার পিতা রমজান আলীর কাছে মোবাইলেফোনে দু লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এ ঘটনায় পরদিন ঝিনাইদহ সদর থানায় মনিরার পিতা রমজান আলী একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তার পরদিন মনিরার পিতা বাদী হয়ে সদর একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ৪ দিনের মাথায় পুলিশ একই গ্রামের শফি বিশ্বাসের ছেলে জিহাদ, মৃত খয়বর বিশ্বাসের ছেলে সিপন ও মজিবরের স্ত্রী নুপুরকে আটক করলেও মনিরাকে জীবিত উদ্ধার করতে পারেনি। অপহরণের ৫ দিন পর গ্রামটির একটি পাটখেত থেকে মনিরার হাত-পা কাটা গলিত প্রায় লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে অপহরণ ঘটনার মূল হোতা একই গ্রামের আছালত মণ্ডলের ছেলে আবু জাফরকে পুলিশ আটক করতে না পারায় বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জাফরসহ তার ভাইদের বাড়ি ব্যাপক ভাঙচুর করে মাটিতে মিশিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে আসামিরা ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

মনিরা হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্থানীয় মানবাধিকার ও  সাংস্কৃতিক সংগঠন কর্মীরা ঝিনাইদহ শহরে গত ১৪ জুলাই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে নাট্যকর্মী, মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

এদিকে মনিরার পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণ ঘটনার মূল আসামি আবু জাফরসহ অনান্যদের গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জানিয়েছে। তবে সহকারী পুলিশ সুপার গোপিনাথ কানজিলাল জানান, তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তারা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘটনার সাথে জড়িত বাকিরা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হবে। হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামটিতে থম থমে অবস্থা বিরাজ করছে।