চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে সাংবাদিক সায়েম হত্যাকাণ্ড : ঘাতক রাজিবের সেই পীরবাবা সামাজুল গ্রেফতার

জীবননগর ব্যুরো: সাংবাদিক আবু সায়েম হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি আটক রাজিব ৩ দিনের রিমান্ডের গতকাল বৃহস্পতিবার শেষ দিনে নতুন কোনো তথ্য দেয়নি। পূর্বের মতো গতকালও বলেছে, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে সে একাই জড়িত। গ্রেফতারের পর পরই সে এটা বলেনি, বলেছে রিমান্ডে নেয়ার পর। যেন সেখানো বুলি। এরকমই মন্তব্য করে পুলিশেরই একসূত্র বলেছে, ঘটনার আড়ালে ঋণ নেয়ার জন্য আবু সায়েম কিছু টাকা লগ্নি করেছিলেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। হত্যার সাথে ঋণ করিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দাতাদের হাত আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে মন্তব্য অনেকের।

আত্মাস্বীকৃত খুনি রাজিবকে আবু সায়েমদের বাড়িতে এনে রেখে যাওয়া কুষ্টিয়ার দৌলৎপুরের পীরবাবা সামাজুল বিশ্বাসকে (৫২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই লুৎফুল কবির গত বুধবার রাতে এএসআই আশরাফ উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন। সে দৌলৎপুর উপজেলার আলীনগর গ্রামের মেশাররফ হোসেন বিশ্বাসের ছেলে। সে ঘাতক রাজিব সরকারকে এনে আবু সায়েমদের বাড়িতে রেখে যায়।

সাংবাদিক আবু সায়েম হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই লুৎফুল কবির জানান, গত ১০ জুলাই মামলার চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সোপর্দ পূর্বক ঘাতক রাজিবের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে গত ১৪ জুলাই ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে তাকে চুয়াডাঙ্গা আদালত থেকে জীবননগর থানা কাস্টডিতে নিয়ে রিমান্ডের প্রথম দিনে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় তাকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হলে রাতে তাকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হলে সে পুলিশের নিকট সাংবাদিক আবু সায়েম হত্যার কথা স্বীকার করে। তবে কি কারণে সাংবাদিক আবু সায়েমকে সে হত্যা করেছে এবং এর পেছনে কেউ জড়িত আছে কি-না তা পুলিশকে গতকাল রিমান্ডের শেষ দিনেও সে উত্তর দেয়নি। আজ শুক্রবার রাজিব ও সামাজুলকে চুয়াডাঙ্গা থানা হাজতে প্রেরণ করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ৭ জুলাই রাতে রাজিব সরকার লালসালু পরে সাধু সেজে সাংবাদিক আবু সায়েমের শয়নকক্ষে প্রবেশ করে এবং তাকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। মুমূর্ষু অবস্থায় আবু সায়েমকে উদ্ধার করে প্রথমে জীবননগর স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে যশোর সদর হাতপাতাল নেয়া হয় এবং পরদিন ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।