সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্তে গুলিতে একজন নিহত : একজন নিখোঁজ

মহেশপুর সীমান্তে বিএসএফর গুলিতে দু বাংলাদেশি আহত

 

মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার লড়াইঘাট সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে দু বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পাতড়াখোলায় বিএসএফের দা’র কোপে মুকুল হোসেন (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তিনি বাঁশদহা ইউনিয়নের হাওয়ালখালী গ্রামের মহতাব উদ্দিনের ছেলে। এদিকে গতকাল শনিবার পৃথক সময়ে চুয়াডাঙ্গাস্থ ৬ বিজিবির আওতাভুক্ত রাজাপুর, বারাদী সীমান্তে বিএসএফ-বিজিবির বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

            মহেশপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ মহেশপুরের অনন্তপুর গ্রামের আবু সিদ্দিকির ছেলে আব্দুর রশিদ ও আব্দুল মোমিনের ছেলে তরিকুল ইসলাম সীমান্তে গেলে বিএসএফ’র গুলিতে আহত হন। আহত হওয়ার পর আব্দুর রশিদকে বিএসএফ তুলে নিয়ে যায়। আহত অবস্থায় পালিয়ে বাড়ি ফিরে তরিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতে আটজনের একটি দল জিরো লাইন পার হয়ে কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে ভারতে গরু আনতে গিয়েছিলাম। ভোরে খাগড়া গ্রাম থেকে গরু নিয়ে বাংলাদেশে ফেরার সময় ফতেপুর ক্যাম্পের বিএসএফ টের পেয়ে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে তার চাচা আব্দুর রশিদ পড়ে যায়। তারও পিঠে গুলি লাগে। সে আহত অবস্থায় অন্যদের সাথে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। চাচাকে বিএসএফ তুলে নিয়ে যায়। মহেশপুর থানার ওসি শাহিদুল ইসলাম জানান, আহত রশিদ নদীয়ার জেলা সদর শক্তিনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। শনিবার বিকালে লড়াইঘাট সীমান্তে কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে বিজিবি বিএসএফ’র মধ্যে  ফ্লাগ মিটিং হয়েছে।

অপরদিকে সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের পাতড়াখোলায় বিএসএফের দা’র কোপে মুকুল হোসেন (৩৫) নামে এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। তিনি বাঁশদহা ইউনিয়নের হাওয়ালখালী গ্রামের মহতাব উদ্দিনের ছেলে। তার এক সঙ্গী একই গ্রামের আলী হোসেন বিএসএফের দা’র কোপে মুকুলের নিহতের খবর প্রচার করেই পুলিশ ও বিজিবির ভয়ে গা ঢাকা দিয়েছে। পুলিশ ও বিজিবি মুকুলের লাশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। কুশখালী ইউপি সদস্য আব্দুল গনি জানান- আলী হোসেন তাদের জানিয়েছেন যে, মুকুল এবং তিনি শনিবার ভোরে ভারত থেকে গরু নিয়ে বাংলাদেশে ফিরছিলেন। এ সময় বিএসএফের দুবলি ক্যাম্প সদস্যরা তাদের ওপর হামলা করে। তাদের দা’র কোপে মুকুল হোসেন ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে তার লাশ বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ফেলে রাখা হয়। এ খবর দেয়ার পরপরই আলী হোসেন গা ঢাকা দেয়। বিজিবির কুশখালী বিওপির নায়েক সুবেদার বিল্লাল হোসেন জানান, খবরটি তিনিও শুনেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়নি।

এদিকে গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১০টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের বারাদী বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার মেন পিলার ৮২/১৪-টি’র নিকট শূন্যরেখা বরাবর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা থানার বারাদী নামক স্থানে বিজিবি-বিএসএফ বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন বারাদী বিওপি কমান্ডার মো. লুৎফর রহমান এবং প্রতিপক্ষ বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১১৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোবিন্দপুর ক্যাম্প কমান্ডার এসআই ইগেন্দর কুমার ।

গতকালই দুপুর ২টা থেকে ২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত ৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের জীবননগর রাজাপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার মেন পিলার ৭২/১-এসের নিকট শূন্যরেখা বরাবর চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর থানার মানিকপুর মাঠ নামক স্থানে বিজিবি-বিএসএফ বিওপি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন রাজাপুর বিওপি কমান্ডার মো. মিন্টু সরকার এবং প্রতিপক্ষ বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ১১৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গেদে আমবাগান ক্যাম্প কমান্ডার এসআই জীতেন্দ্র সিংহ। ৬ বিজিবি এক প্রেসনোটে এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, পতাকা বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকা, তারকাঁটার বেড়া না কাটা, ভারত হতে কোনো মাদকদ্রব্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে না আসা, নারী ও শিশু পাচার না হওয়া এবং অবৈধভাবে কোনো বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিক যাতে সীমান্ত পারাপার না হয় সে ব্যাপারে আলোচনা হয়।