ভিড়ে ভিড়েছে পকেটমার : হুঁশ হারালেই সর্বনাশ!

জমে উঠেছে চুয়াডাঙ্গার ঈদ বাজার : জমজমাট কেনাবেচা

 

DSC09089

আলম আশরাফ: চুয়াডাঙ্গায় ঈদ বাজার জমে উঠেছে। আর এই সুযোগে জেলা শহরের ব্যস্ততম বিপণি বিতানগুলোতে ভিড়ের মাঝে ঘুর ঘুর করছে পকেটমারের দল। গতকাল চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটে একজনের তিন হাজার টাকা পকেট মারা হয়েছে। পুরাতনবাজার গলির মধ্যে থ্রিপিস কিনে ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকা বের করার সময় টাকা চুরির বিষয়টি টের পেয়েছেন এক নারী। তার ভ্যানিটি ব্যাগের চেন খুলে ব্যাগে থাকা আড়াই হাজার টাকা কোথা থেকে চুরি হয়েছে তা অবশ্য তিনি বুঝতে পারেননি।

সপ্তাজুড়ে লাগাতার বৃষ্টির মাঝেও চুয়াডাঙ্গার মার্কেটগুলোতে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ক্রেতাদের ভিড় কম ছিলো না। গতপরশু শুক্রবার বিকেল থেকে বৃষ্টি কমতেই বাজারে উপচেপড়া ভিড় নামে। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের বড়বাজার পুরাতনগলি, সমবায় নিউ মার্কেট, প্রিন্সপ্লাজা, মুন সুপার মার্কেটসহ শহীদ আবুল কাশেম সড়কের দোকানগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সাথে কথা বলারই সুযোগ মেলেনি। ক্রেতাদের সামলাবেন নাকি সংবাদিকের সাথে কথা বলবেন? সাংবাদিক দূরাস্ত, বাড়ির গিন্নির সাথে কথা বলারও যেন সুযোগ নেই ঈদ বাজারে প্রসার সাজিয়ে বসা দোকানিদের।

ভিড় নেই এমন দোকান পাওয়া যায়নি। শাড়ির দোকান থেকে শুরু করে কসমেটিকস, জুতোর দোকান থেকে গার্মেন্টস দোকান। ক্রেতাদের অধিকাংশই নারী। সকাল হতে না হতে ভিড় শুরু হচ্ছে। রাত ১১টাতেও থাকছে ভিড়ের কিছু অংশ। দিনে গ্রামপর্যায়ের ক্রেতাদের ভিড়ে বেশি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেউ কেউ। এই ভিড়ের মাঝে গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সমবায় মার্কেটে পকেট মারের শিকার হয়েছেন গাড়াবাড়িয়ার আব্দুস সালাম। তিনি বলেছেন, মাকেটে কেনা-কাটার মাঝে কখন যে পকেটে থাকা তিন হাজার টাকা মেরে নিয়েছে তা টেরই পাইনি। অপরদিকে প্রায় একই সময় বড়বাজার পুরাতন গলির একটি দোকানে থ্রিপিস কিনে টাকা দিতে গিয়ে এক নারী টের পান তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে চুরি হয়েছে আড়াই হাজার টাকা। তিন মাসের শিশুসন্তান কোলে নিয়ে ওই নারী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, শিশুকে ডাক্তার দেখিয়ে থ্রিপিস কেনার জন্য মার্কেটে এসেছি। কখন যে টাকাটা ভ্যানিটি ব্যাগের চেন খুলে চুরি করে নিয়েছে তা বুঝতেই পারিনি।

তৈরি পোশাকের দোকানে ভিড় লক্ষ্যণীয়। এসব দোকানে সাজানো শিশুদের কিরণমালা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৭শ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়, বড়দের কিরণমালা? দামের বহর অনেক লম্বা। ১৮শ থেকে ৪ হাজার টাকা। কটকটি? ছোটদেরটা সাড়ে ৭শ থেকে ১২শ টাকা। লেহেঙ্গা ২২শ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। থাই থ্রিপিস ১২শ থেকে শুরু করে যতোদূর চাওয়া যায়। জিন্সপ্যান্ট? স্টিসসহ হরেক রকমের জিন্স। বুঝে নেয়া সহজ কথা নয়। সাড়ে ৪শ থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। পাঞ্জাবিরও দাম এবার কম নয়। ঈদে পাঞ্জাবি আর কলাপুরি কমন আইটেম। পাঞ্জাবির দামের যেমন আগা-মাথা নেই, তেমনই জুতোর দোকানে কলাপুরিরও একই অবস্থা। অবশ্য কলাপুরির চেয়ে অন্য পাদুকার দিকেই এবার ক্রেতাদের যেন ঝোঁক বেশি। মেয়েদের জুতো? পছন্দের যেমন লাগাম নেই, দামের যেন তেমনই বহর নেই। কসমেটিকের দোকানে? গাছ থেকে কে পাড়ে পাতা, কে বাটে মেন্দি? হরেক নামের কোম্পানির নানা রঙের মেন্দি কেনার ধুম কসমেটিকসের দোকানে। আর সনো, ফেসওয়াশ, সাবান, শ্যাম্পুর পাশাপাশি পছন্দের চুরি কেনার ধুম পড়েছে। সুগন্ধিও কম বিকোচ্ছেন না বিক্রেতারা। দোকানে দোকানে ভিড়ের মাঝে কে বলবে পকেট সামলান? এই সুযোগে পকেটমারদেরও যেন পোয়া বারো। যদিও ব্যস্ততম বিপণি বিতানকেন্দ্রের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবশ্য পুরাতন গলির মধ্যে পুলিশ দেয়া হয়নি। কেন? জবাব মেলেনি।

Leave a comment