হাতিকাটায় সড়ক অবরোধ : তিন ঘণ্টার মাথায় দাবি আদায়

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের বঙ্গজের সামনে অটোচালককে পুলিশি নির্যাতন : প্রতিবাদ

SAM_0082

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের বঙ্গজ পর্যন্ত নয়, অটো যাবে হাতিকাটা মোড় পর্যন্ত। গতকাল বৃহস্পতিবার এক পুলিশ সদস্যের পিটুনির প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে সড়ক অবরোধের সময় হাতিকাটা মোড় পর্যন্ত অটো চালাচলের দাবি আদায় করে অটোচালকরাসহ এলাকাবাসী। পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ও দাবি আদায়ের মাঝে তিন ঘণ্টার সড়ক অবরোধে অসংখ্য যাত্রীবাহী বাস, ট্রাকসহ সকল প্রকারের যানবাহন আটকে পড়ে। যাত্রী সাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোয়াতে হয়।

জানা গেছে, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ব্যাটারিচালিত অটো চালাচলের পরিধি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। চুয়াডাঙ্গা-দামুড়হুদা সড়কে ফকিরপাড়া আর চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কে অটো চলাচলের সীমানা হয় বঙ্গজ পর্যন্ত। এখানে পুলিশের কয়েকজন সদস্যসহ পরিবহন মালিক সমিতির নিযুক্তরা অটোর সীমা অতিক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা শহরে ভাড়া মেরে বেলা ৩টার দিকে হাতিকাটার অটোচালক ইয়ামিন হোসেন অটো নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। চালক এ দাবি করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, অটোতে কয়েকজন যাত্রী ছিলো। বাড়ি যাচ্ছো তো অটোতে যাত্রী কেন? এ প্রশ্ন তুলতেই পুলিশের সাথে অটোচালক ইয়ামিনের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ ইয়ামিনকে মারপিট করতে শুরু করে। মারপিটের শিকার ইয়ামিন হাতিকাটা মোড়ে গিয়ে মারপিটের বর্ণনা দিতেই স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তারা সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ শুরু করেন। তখন বিকেল সাড়ে ৩টা। অবরোধের সময় স্থানীয়রা অভিযোগ করতে গিয়ে বলেন, অটো চলাচলের সীমানা বঙ্গজ পর্যন্ত করে দেয়ায় হাতিকাটার সাধারণ মানুষসহ ছাত্রছাত্রীদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। অনেক সময়ই অতিরিক্ত খরচ করতে হয়। মেহেরপুর থেকে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে ছেড়ে আসা বাসগুলো সময় বাঁচাতে হাতিকাটা মোড় দ্রুত গতিতে অতিক্রম করে। অধিকাংশ সময়ই থামে না। দু একটি বাস থামলেও সামান্য পথ যাওয়ার পরও দৌলাতদিয়াড়ে নামিয়ে দেয়। এতে অটো ভাড়া অতিরিক্তই শুধু গুণতে হয় না, হয়রানির শিকারও হতে হয়। এসব যুক্তিতে অটো চলাচলের সীমানা হাতিকাটা মোড় পর্যন্ত করার দাবি জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের শাস্তির দাবি জানানো হয়।

খবর পেয়ে অবরোধ তুলতে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে সদর থানার ওসি তদন্ত সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাতিকাটা মোড়ে পৌঁছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিলেও আন্দোলনকারীদের মন গলেনি। চলতে থাকে অবরোধ। এ সময় দু প্রান্তে অসংখ্য যাত্রীবাহী কোচ, বাস, ট্রাকসহ সকল প্রকারের যান আটকে পড়ে। যাত্রী সাধারণকে দুর্ভোগ পোয়াতে হয়। এক পর্যায়ে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসম্পাদক আসাদুল হক বিশ্বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলেন। তিনি বিষয়টি বিস্তারিত জানার পর মোবাইলফোনে পুলিশ সুপারকে সবিস্তারে বর্ণনা করেন। কথা বলার পর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস আন্দোলনকারীদের বলেন, এখন থেকে বঙ্গজের ওখানে আর পুলিশ থাকবে না। অটো হাতিকাটা পর্যন্তই চলবে। এ কথা শুনে অবরোধ সরিয়ে নেয়া হয়। ততোক্ষণে অবরোধের স্থায়িত্ব দাঁড়ায় তিন ঘণ্টা।