ডাকাতি শেষে কৃষক অপহরণ : উদ্ধার

দামুড়হুদার বেড়বাড়ি-হেমায়েতপুরে অস্ত্রধারী দর্বৃত্তদের হানা

 

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদার বেড়বাড়ি-হেমায়েতপুরে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা এক বাড়িতে ডাকাতি শেষে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রসুল (৫৫) নামের এক কৃষককে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে। অপহরণের পর তার কাছে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান তাৎক্ষণিকভাবে ওই এলাকার পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশি অভিযান শুরু করেন। পুলিশি অভিযান টের পেয়ে দুর্বৃত্তরা অপহৃত রসুলকে ভগিরথপুর-ছুটিপুরের জোড়াখাল ভেদাগাড়ি রাস্তার ওপর রেখে পালিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ তাকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে। গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নতিপোতা ইউনিয়নের বেড়বাড়ি গ্রামের মনিরদ্দিনের ছেলে কৃষক আলতাফ হোসেনের বাড়িতে গত মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ১০/১২ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী প্রবেশ করে এবং পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫টি মোবাইলফোন, সোনার চেন ও এক জোড়া কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এর পরপরই দুর্বৃত্তরা আলতাফের প্রতিবেশী মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে কৃষক রসুলের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং রসুলকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান তাৎক্ষনিকভাবে ভগিরথপুর, কালিয়াবকরী, দুলালনগর ও চারুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা গ্রামবাসীকে সাথে নিয়ে একদিকে অপহৃত রসুলকে উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রাখে এবং ওই এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠান। এরই এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে অপহৃত রসুলকে ভগিরথপুর-ছুটিপুরের জোড়াখাল-ভেদাগাড়ি রাস্তার ওপর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি জানার সাথে সাথে এলাকার পূর্ব থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ পাঠায়। তাদের কাউকেই ওই রাতে বাড়ি পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাদের ঘিরে ফেলেছে এ আশঙ্কায় অপহৃতকে রেখে পালিয়ে যায়। চারুলিয়ার ৬ জন, দুলালনগরের ২ জন এবং নতিপোতা গ্রামের ১ জনসহ আরো কয়েকজন এ ঘটনার সাথে জড়িত বলে আমি প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি জাল বিস্তার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ঘটনার সাথে জড়িতরা আমার হাত থেকে কেউই রেহাই পাবে না। তাদের পেছনে যতো বড় শক্তিই থাকুক না কেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতিও চলছে। তবে আলতাফের বাড়িতে ডাকাতির বিষয়টি আমার জানা নেই।

এদিকে রসুলের পরিবার নতিপোতা গ্রামের আনছার আলীর ছেলে খোকনকে (৩৬) চিনে ফেলার পরও ভয়ে নাম প্রকাশ করতে সাহস পাচ্ছে না বলে এলাকাসূত্রে জানা গেছে। এলাকাবাসীরা আরো জানায় পুলিশ ওই রাতেই খোকনের বাড়িতে গিয়েছিলো। কিন্তু তাকে বাড়িতে পায়নি। রসুল সম্প্রতি তামাকের টাকা তুলেছে এ খবর পেয়েই সন্ত্রাসীরা তাকে অপহরণ করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার অধিকাংশ শান্তিপ্রিয় মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সপ্তাখানেক আগে কালিয়াবকরি গ্রামের মমিন ও চাঁদ আলীর বাড়িতে ডাকাতরি ঘটনা ঘটে। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদারের জন্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।