বাদীর অভিযোগ হত্যা মামলার আসামিদের ধরছে না পুলিশ

ফলোআপ: চুয়াডাঙ্গার হরিশপুর গ্রামের রাজ্জাক হত্যা মামলার ২ মাস পার

 

খাইরুজ্জামান সেতু: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের হরিশপুর গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আব্দুর রাজ্জাককে পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসার এক পর্যায়ে মারা যান তিনি।

অভিযোগ করা হয়, চাচা ইউনুচ ও তার লোকজন প্রকাশ্যে পিটিয়ে ভাতিজা রাজ্জাককে হত্যা করেছে। মামলা হয়। এ ঘটনার প্রায় দু মাস অতিবাহিত হলেও এখনও পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলার বাদীপক্ষের অভিযোগ, পুলিশ আসামিদের ধরছে না। মামলার বাদী বিল্লাল হোসেন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। অপরদিকে রাজ্জাকের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ গণস্বাক্ষর করেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৬ মে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের হরিশপুর দক্ষিণপাড়ার বদর উদ্দিনের ছেলে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি আব্দুর রাজ্জাককে (৩২) জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হরিশপুর বাজারের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করে চাচা ইউনুচ গং। পরের দিন ময়নাতদন্ত শেষে রাজ্জাকের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়। এ ঘটনায় রাজ্জাকের চাচা বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে বছির উদ্দীনের ছেলে ইউনুচ, গাজির রহমানের ছেলে আব্দুল কহেদ, আমির হোসেন, জামির হোসেন, জহির মাস্টার ও বক্সের ছেলে মহিদুলকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত রাজ্জাকের পরিবার থেকে অভিযোগ করা হয়েছে ঘটনার প্রায় দু মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কাউকে যেমন গ্রেফতার করতে পারেনি, পক্ষান্তরে মামলার তদন্তকারী অফিসার বেগমপুর ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম আসামি পক্ষের সাথে আঁতাত করে চলেছেন। মামলার বাদী বিল্লাল হোসেন অভিযোগ করে আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডা. আলী হোসেনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট ময়নাতদন্ত বোর্ড গঠিত হয়। যেখানে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে রাজ্জাক হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যা কোনোভাবেই আমরা মানতে পারছি না। আমার ভাতিজাকে তাড়িয়ে ধরে পিটিয়েছে আসামিরা। যা বাজারের লোকজন দেখেছে। এমনকি পুরষাঙ্গে আঘাতে রক্তক্ষরণ হচ্ছিলো তাও দেখেছে লোকজন। এখন ডাক্তারদের এহেন প্রতিবেদন আমাদেরকে মর্মাহত করেছে। এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আইনি আশ্রয় নিতে যাচ্ছি।

এদিকে গতকাল রোববার নিহত রাজ্জাকের বাড়িতে গেলে অসহায় রাজ্জাকের পিতা বদর উদ্দীনের কণ্ঠে একটিই ভাষা আমার ছেলেকে আমার চোখের সামনে তারা হত্যা করেছে, আমি এর বিচার চাই। রাজ্জাক হত্যার বিচারের দাবিতে গ্রামের ৫ শতাধিক মানুষ গণস্বাক্ষর দিয়েছে বলেও জানানো হয়। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, বাদীপক্ষ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে আপত্তি জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাজ্জাক হত্যা মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই শফিকুল ইসলাম বলেন, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

Leave a comment