প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ১১ রমজান। মাগফেরাতের দশকের আজ প্রথম দিন। মাগফেরাত অর্থ মাফ, ক্ষমা, পাপমোচন ইত্যাদি। বান্দা পাপ করতে ভালোবাসে আর আল্লাহ মাফ করতে ভালোবাসেন। এজন্য আমাদের অতীতের ভুল-ভ্রান্তির কথা স্মরণ করে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে মাফ চাওয়া উচিত যাতে তিনি আমাদের সমন্ত গুনাহ মাফ করে দেন। এজন্য বেশি বেশি তওবা, এস্তেগফার এবং কান্নাকাটি করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাওয়া দরকার। আমরা যদি খাঁটি দিলে তওবা করি তাহলে আশা করা যায় পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ তায়ালা আমাদের গুনাহরাশি ক্ষমা করে দেবেন। আমরা মানুষ মাত্রই পাপ করবো, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আল্লাহ পাক এই পাপ মোচনেরও সুযোগ করে দিয়েছেন। পাপ মোচনের উপায় হলো তওবা করা। পেনসিলের কালি যেমন ইরেজার দ্বারা মোছা যায় ঠিক তেমনি তওবা দ্বারাও সমস্ত পাপ মোচন করা যায়। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা কোরআন শরিফে বেশি বেশি তওবার কথা বলেছেন। মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, হে মানব সকল, তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তওবা কর (আল-কোরআন)। অন্য এক আয়াতে মুমিনদের গুণাবলি বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা তওবাকারী, শুকরগোজার, দুনিয়ার প্রতি নিরাসক্ত, রুকু-সেজদাহ আদায়কারী, সৎকাজের আদেশকারী, মন্দ কাজ থেকে নিষেধকারী এবং আল্লাহর দেয়া সীমাসমূহের হেফাজতকারী (সূরা তওবা: ১১২)। অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন, তারা আল্লাহর কাছে কেন তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করে না? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল, দয়ালু (আল মায়েদা: ৭৪)। আর এক আয়াতে আল্লাহ জাল্লা শানুহ এরশাদ করেন, যারা তওবা করেছে এবং নিজেদের অবস্থার সংশোধন করেছে এবং আল্লাহর পথকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে আল্লাহর আদেশ পালনকারী হয়েছে, তারা থাকবে মুসলমানদের সাথে। বস্তুত আল্লাহ তায়ালা শিগগিরই মুমিনদেরকে বড় প্রতিদান দেবেন (সূরা নিসা: ১৪৬)। হুজুর (সাঃ) এর অগ্র-পশ্চাৎ সমস্ত গুনাহ আল্লাহপাক মাফ করে দিয়েছিলেন। তারপরও তিনি উম্মতের শিক্ষার জন্য প্রতিদিন সত্তর থেকে একশ বার আল্লাহর কাছে তওবা করতেন (মুসলিম)। আমরা যতো বড় পাপিই হই না কেন আল্লাহ তা’য়ালার রহমত হতে নিরাশ হওয়া উচিত নয়। কারণ, আল্লাহ জাল্লা শানুহ এরশাদ করেন, আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন (সুরা যুমার: ৫৩)। এজন্য আমাদেরও উচিত এই মহান মাসে বেশি বেশি নিজের জন্য এবং সমস্ত উম্মতের জন্য দোয়া ও এস্তেগফার করা।