বুলড্রোজার পেলোডার দিয়ে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলো প্রশাসন

চুয়াডাঙ্গার প্রধান প্রধান সড়কের দু ধারের অবৈধ স্থাপনা কেউ কেউ সরিয়ে নিলেও অনেকেই ছিলেন অটল

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর ও শহরতলীর প্রধান প্রধান সড়কের দু ধারের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। গত ৪ জুন কোর্টমোড় থেকে কলেজ সড়কের পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। বুলড্রোজার দিয়ে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়। অবশ্য উচ্ছেদ অভিযান দেখে অনেকেই সড়কের জমিতে পেতে বসা দোকান সরিয়ে নেন।

অবৈধ স্থাপনা অভিযানে নেতৃত্বে ছিলেন চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম ও সোনিয়া হাসান। সহযোগিতায় ছিলেন সড়ক উপবিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মাইদুল ইসলাম, সার্ভেয়ার নজরুল ইসলাম, বিদ্যুত বিতরণ বিভাগের চুয়াডাঙ্গা উপসহকারী প্রকৌশলী রুহুল আমিনসহ সদর থানার একাধিক পুলিশ দল। গতকাল শহীদ হাসান চত্বরের, নিচের বাজারের প্রবেশমুখ, দৌলাতদিয়াড় ব্রিজের নিকট থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত, ভিজে স্কুল সড়ক থেকে শুরু করে কেদারগঞ্জ নতুন বাজার পর্যন্ত সড়কের দু ধারের সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কেদারগঞ্জ নতুন বাজারের বড় রড়ের দোকানেরও একাংশ উচ্ছেদের আওতায় পড়ে। তাও গুড়িয়ে দেয়া হয়। উচ্ছেদ অভিযানের সময় রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেলসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পড়েন সিঅ্যান্ডবিপাড়ার হামিদুল ইসলামের ছেলে রাকিবুল। তাকে ১৫শ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদণ্ডাদেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা খানম। এদিকে দৌলাতদিয়াড়ে সড়কের ধারে কাউন্টার না সরানোর দায়ে বাগানপাড়ার চাঁদ আলীর ছেলে কবিরের ১৫শ টাকা জরিমানা করা হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোনিয়া হাসান এ দণ্ডাদেশ দেন। সংশ্লিষ্টসূত্র এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, জরিমানার অর্থ সাথে সাথে আদায় হয়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর ও শহরতলীর প্রধান প্রধান সড়কের ধারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের, জেলা পরিষদের ও পৌর সড়কের ধারে দীর্ঘদিন ধরে পর্যায়ক্রমে গড়ে তোলা হয় অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনার অধিকাংশই বিভিন্ন প্রকারের দোকান। মাঝে মাঝে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার নোটিশ জারির পরও তাতে সাড়া না পাড়ায় জেলা প্রশাসন উচ্ছেদের কথা জানিয়ে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার চূড়ান্ত নোটিশ দেয়। এতে কেউ কেউ সাড়া দিলেও অনেকেই অবৈধ স্থাপনায় ব্যবসা অব্যাহত রাখেন। এরই এক পর্যায়ে গত ৪ জুন শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। কোর্টমোড়ের পুরাতন জেলখানার নিকট থেকে শুরু করে কলেজ রোডের ঈদগা মোড় পর্যন্ত ওইদিন উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের পরও অনেকে পরবর্তীতে আবারও স্থাপনা গড়ার চেষ্টায় স্থানটি কৌশলে দখলে রাখার প্রক্রিয়া করে। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার শহীদ হাসান চত্বরের সড়কের পাশের অবৈধ স্থাপনার একটিও রেহাই পায়নি। বুলড্রোজার পেলোডার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় অবৈধ স্থাপনা। দৌলাতদিয়াড়ের সড়কের দু ধারের অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়। কেদারগঞ্জ নতুন বাজার এলাকাতেও একই সময়ে চলে উচ্ছেদ অভিযান। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়।

এদিকে দৌলাতদিয়াড়সহ বিভিন্ন স্থানে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা পেতে বসাদের কেউ কেউ বলেন, ক’দিন আগেই পজিশন কিনে কী ভুলটাই না করেছি। কেউ কেউ বলেন, নোটিশ যথাযথভাবে পেলে ক্ষতির পরিমাণ কমতো। তবে পথচারী অনেকেই এ অভিযানকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করে বলেছেন, যখন অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয় তখনই উচ্ছেদ করা হলে অবৈধ স্থাপনা ব্যাপকতা পায় না। এদিকেও প্রশাসনের নজরদারি দরকার।