অপহরণের ১২ ঘণ্টার মাথায় অপহরকচক্রের ডেরা থেকে অপহৃত উদ্ধার : কুড়ুলসহ একজন পাকড়াও

চুয়াডাঙ্গার বদরগঞ্জ থেকে তিয়রবিলায় ফেরার পথে কুতুবপুরের নিকট দুর্বৃত্তদের হানা : ভেস্তে গেছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের পরিকল্পনা

 

স্টাফ রিপোর্টার: অস্ত্রের মুখে অপহরণের ১২ ঘণ্টার মাথায় অপহৃত আমিরুল ইসলামকে অপহরকচক্রের ডেরা থেকে উদ্ধার করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গার পল্লি মধুপুর গ্রামের মহাদ্দেস আলীর বাড়ি থেকে অপহৃতকে উদ্ধারের সময় কুড়ুল নিয়ে পাহারায় থাকা অপহরকচক্রের সদস্য ইনতাজকে পাকড়াও করা হয়েছে।

অপহৃত আমিরুল ইসলাম আলমডাঙ্গার তিয়রবিলা গ্রামের আহাদ আলী মণ্ডলের ছেলে। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গার বদরগঞ্জ বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে কুতুবপুরের অদূরবর্তী স্থানে একদল দুষ্কৃতী অস্ত্রের মুখে গতিরোধ করে। মাথায় ও শরীরে মারপিট করে। মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থলে পড়ে থাকে। সারারাত হাঁটিয়ে নেয়া হয় অপহরকদের ডেরায়। খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের একটি চৌকসদল দ্রুত অভিযান শুরু করে। অপহরণের ১২ ঘণ্টার মাথায় অপহৃতকে উদ্ধার করতে সক্ষম হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষ ডিবি পুলিশকে অভিনন্দন জানিয়েছে।

ডিবি পুলিশের হাতে কুড়ুলসহ ধরাপড়া ইনতাজ আলী আলমডাঙ্গা খেজুরার আবু বক্করের ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে অপহরণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে তার বেশ কয়েকজন সহযোগীর নাম বলেছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেগোয়ারখালীর আইনালের ছেলে শামসুল ও চরপাড়ার শাজাহানের ছেলে তৌহিদুরকে ধরতে গতরাতে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। তবে তাদের আটক করা সম্ভব হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।

অপহরণের শিকার আমিরুল ইসলাম বলেছেন, বদরগঞ্জ বাজারের অদূরে একটি পুকুর খননের কাজ চলছে। পেলোডার দিয়ে খননের কাজ শেষে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বদরগঞ্জ বাজার হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি তিয়রবিলার উদ্দেশে রওনা হই। কুতুবপুরের অদূরে মাঠের মধ্যে ৭/৮ জনের একদল দুষ্কৃতী সামনে ধারালো অস্ত্র ধরে গতিরোধ করে। থামতেই মাথায় টসলাইট দিয়ে মারে। মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গেলে ৪ জন ধরে হাঁটাতে শুরু করে। পরনে থাকা লুঙ্গি দিয়ে চোখ বাঁধে। হাঁটাতে হাঁটাতে বহুদূর নেয়। আজানের পর একটি বাড়িতে তোলে। সেখানে নিয়ে অপহরকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। বলে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হবে। টাকা না দিলে আজ রাতেই মেরে লাশ মাঠের মধ্যে ফেলে রাখতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই আমির আব্বাস বলেছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অপহৃতকে মধুপুরের মহাদ্দেসের বাড়িতে আটকে রাখা হয়েছে বলে জানতে পারার সাথে সাথে অভিযান শুরু করি। বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। হাতেনাতে আটক করা হয় ইনতাজকে। অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় অপহৃতকে। উদ্ধার ও আটকের পর দুজনকেই পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইনতাজ বেশ কিছু তথ্য দিয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানান তিনি। অপহৃত আমিরুল ইসলামের ভাই শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। চিকিৎসার জন্য আমিরুলকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।