১৬৭টি জেলা সড়ক উন্নয়নে একনেকে প্রকল্প অনুমোদন

স্টাফ রিপোর্টার: দেশের ১৬৭টি জেলা সড়কের আওতাধীন ১৫৫৭ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পটির নাম জেলা সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ৯৯৬ কোটি টাকায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পটি সম্পন্ন করবে। মোট ব্যয়ের মধ্যে ঢাকা জোনের অন্তর্ভুক্ত ১৬টি সড়ক উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে গতকাল প্রধানমন্ত্রী ও একনেক সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা ছাড়াও ময়মনসিংহ জোনের ১৭টি সড়ক উন্নয়নে ৯৯ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জোনের ১৪টি সড়ক উন্নয়নে ৯৯ কোটি টাকা, কুমিল্লা জোনের ২৬টি সড়ক উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা, সিলেট জোনের ১০টি সড়ক উন্নয়নে ৯৯ কোটি টাকা, খুলনা জোনের ২৬টি সড়ক উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা, বরিশাল জোনের ২১টি সড়ক উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা, গোপালগঞ্জ জোনের ৫টি সড়ক উন্নয়নে ৯৯ কোটি টাকা, রাজশাহী জোনের ১৪টি সড়ক উন্নয়নে ১৯৫ কোটি টাকা এবং রংপুর জোনের ১৮টি সড়ক উন্নয়নে ১০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

গতকালের একনেক সভায় ১৫৭৬ কোটি টাকার ৮টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদিত ব্যয়ের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১৫৬১ কোটি টাকা এবং ১৫ কোটি টাকার সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থাকছে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও পারকি সমুদ্র সৈকতে দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে অন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ২০১৭ সালের জুন নাগাদ প্রকল্পটি সম্পন্ন করবে। প্রকল্পটির গুরুত্ব নিয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, পর্যটন সেবার মানোন্নয়নের জন্যই এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। তেজগাঁও-এ বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত একটি প্রকল্পও অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় ৩৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে করে বিসিকের এই ভবনে একটি গবেষণা উইং চালু করা হয়। গবেষণা উইংয়ের কাজ হবে স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বাজারভিত্তিক চাহিদা নিরূপণ করা। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন সড়ক সংযোগের ফলে নেপাল, ভূটান, ভারতের সেভেন সিস্টারস, মায়ানমার ও চীনের সাথে বাণিজ্য সম্প্রসারণ হবে। এক্ষেত্রে এসব দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের একটি বাজার গড়ে উঠবে। বাংলাদেশকে এ সুযোগটি কাজে লাগাতেই হবে। এজন্য গবেষণা উইংয়ের কোন বিকল্প নেই।

একনেক সভায় অনুমোদিত অন্যান্য প্রকল্প হলো, ৭৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ প্রকল্প, ৩৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে পুলিশ বিভাগের ৫০টি সার্কেল এএসপির অফিস কাম বাসভবন নির্মাণ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়ে ২৫টি), ১৮০ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকা সংরক্ষণের লক্ষে পদ্মা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। এছাড়া দুটি প্রকল্প সংশোধনী অনুমোদন করা হয়েছে। এগুলো হলো, ৪১ কোটি ৫১ লাখ টাকা ব্যয়ে সার পরীক্ষাগার ও গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প (২য় সংশোধিত)। এর ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশ। চলতি বছর জুনে প্রকল্পটি শেষ হবার লক্ষ্য থাকলেও সংশোধন অনুযায়ী এর মেয়াদ আরো এক বছর বৃদ্ধি করা হলো। ১৩১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ের উপজেলা প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন (৩য় পর্যায়, ২য় সংশোধিত)। এর ব্যয় বৃদ্ধি পেলো ৬২ শতাংশ এবং জুন ২০১৬ সালে মেয়াদ শেষ হবার লক্ষ্যকে বাড়িয়ে জুন ২০১৭ সাল করা হয়েছে।