উচ্চ ফলনশীল ইনব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন

 

স্টাফ রিপোর্টার: দেশিয় জাতের ধানের সাথে উচ্চ ফলনশীল ধানের কৃত্রিম সংস্কারায়ন ঘটিয়ে নতুন জাতের উচ্চ ফলনশীল ইনব্রিড ধান উদ্ভাবনে সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশি প্ল্যান্টব্রিডার ড. মো. নাজমুল হক শাহীন। নিজ উদ্যোগে দেশিয় ধানের জাত নিয়ে দীর্ঘ ১৯ বছর নিরলস গবেষণা করে ৮শ ৫০টি উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের ধান উদ্ভাবন করেন তিনি। ১০৫-১৪৫ দিনের জীবনকাল সম্পন্ন ওই ধানের জাতগুলো বৈরি আবহাওয়ায় চাষ উপযোগী এবং বিঘা প্রতি ৩৩-৪০ মণ ফলন পাওয়া যাবে বলে দাবি করেছেন তিনি।

ড. শাহিন ১৯৯৭ সালের দিকে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার একটি দেশি ধানের বন্য জাত নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। দীর্ঘদিন পর্যবেক্ষণ করে প্রচলিত কোনো জাতের ধানের সাথে সাদৃশ্য না পেয়ে এর নামকরণ করেন দোলা আমন। পরবর্তীতে তিনি দোলা আমন ধানের কৃত্রিম সংস্কারায়ন ও প্রোজেনী নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৯ বছর গবেষণা করে ৮শ ৫০টি নতুন উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেন যা দেশি ধানের জাতের চেয়ে অধিক ফলনশীল। তার উদ্ভাবিত ধানের জাতগুলোর গড় ফলন বিঘা প্রতি ৩৩-৪০ মণ যা দোলা আমন ধানের জাতের ফলন অপেক্ষা ৩ গুণেরও বেশি।

ড. শাহিন উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলোতে রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। প্রচলিত ধানের জাতের তিন ভাগের এক ভাগ সার প্রয়োগ করে চাষাবাদ করা সম্ভব। নতুন এ জাতগুলো নিচু হতে উঁচু জমি, আউশ, আমন এবং বোরো মৌসুমে চাষ উপযোগী। ধানের জাতগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে নিম্ন তাপমাত্রা, লবণাক্ততা ও জলাবদ্ধতা সহনশীল।

ড. নাজমুল হক শাহীন কুমিল্লার হোমনা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিষয়ে তিনি পিএইচডি ও জাপানের কচি ইউনিভার্সিটি হতে পোস্ট ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশি ইন্ডিকা ধানের জাতের উত্পত্তি ও বিবর্তনের বিষয়ে মতবাদ প্রকাশ করেন যা আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত।