আলমসাধু-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে সেনেটারি মিস্ত্রি মফি নিহত : আহত ৪

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের কুলপালার বাঁকে একটি বাসের সাইড দিতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা

 

স্টাফ রিপোর্টার/ভালাইপুর প্রতিনিধি: শ্যালোইঞ্জিনচালিত অবৈধ যান আলমসাধুর সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেলচালক চুয়াডাঙ্গা জাফরপুর স্টেডিয়ামপাড়ার সেনেটারি মিস্ত্রি মফিজুল ইসলাম মফি (৩৮) নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আলমসাধুচালকসহ মোটরসাইকেলের তিন আরোহী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের গোকুলখালী-কুলপালার মধ্যবর্তী ভাদেরপুলের নিকট এ দুর্ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে আলমসাধুচালক মেহেরপুর জেলা সদরের পাটকেলপোতার জাহিদুল ইসলাম ও মোটরসাইকেল আরোহী চুয়াডাঙ্গা নূরনগরের রকির (২৪) অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমিনুল ইসলামের ছেলে জাহিদুলকে গতরাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মকুল হোসেনের ছেলে রকি সংজ্ঞাহীন অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলো। অপর আহতরা হলো- জাফরপুর স্টেডিয়ামপাড়ার শুকুর আলীর ছেলে মসলেম (২১) ও বুড়ো সরদারের ছেলে মামুন। মসলেম ও মামুন অনেকটাই আশঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসক মন্তব্য করলেও রকি আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন।

দুর্ঘটনায় নিহত মফিজুল ইসলাম মফির মৃতদেহ গতরাতেই তার বাড়িতে নেয়া হয়। এ সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পারিবারিকসূত্র বলেছে, মফিজুল ইসলাম মফিজ দীর্ঘদিন ধরে নূরনগরে বসবাস করতেন। আজ শনিবার সকাল ১০টায় নূরনগর ঈদগা ময়দানে নামাজে জানাজা শেষে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে। তিনি মুনছুর আলীর ছেলে। দু ভাই এক বোনের মধ্যে মফি ছিলেন তৃতীয়। তার রয়েছে শিশু দু ছেলে ও এক মেয়ে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে সেনেটারি মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। সদালাপী হিসেবে বহুল পরিচিতও ছিলেন তিনি। গতকাল শুক্রবার মেহেরপুরে কাজ শেষে একটি মোটরসাইকেলে তিনি ও তার তিন সহকর্মী রকি, মসলেম ও মামুন ফিরছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, একটি মোটরসাইকেলে ছিলেন ৪ জন। কুলপালা-গোকুলখালীর মধ্যবর্তী বাঁকে একটি বাসকে সাইড দিতে গেলে আলমসাধু নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরসাইকেলচালক মফি করিমনের সাথে ধাক্কা মারেন। আলমসাধু-মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন মফিজুল ইসলাম মফি। আহত হন তার মোটরসাইকেলে থাকা অপর তিন জন। আলমসাধুচালক জাহিদুলও আছড়ে পড়ে গুরুতর আহত হন। দ্রুত খবর দেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা ফায়ার স্টেশনে। ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেন। মফিজুল ইসলাম মফিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপরদিকে গোকুলখালী ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

আলমসাধুচালক জাহিদুল ইসলাম ধান নিয়ে আলুকদিয়া এলাকায় বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গতকালই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। গতরাতেই তাকে রাজশাহীর উদ্দেশে নেয়া হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত তার ভাগ্যে কী ঘটেছে তা নিশ্চিত করে জানা সম্ভব হয়নি। এদিকে দুর্ঘটনায় নিহত মফিজুল ইসলাম মফির মৃত্যুতে তার স্ত্রীসহ নিকটজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তিনিই ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পুরুষ। তাকে হারিয়ে সকলেই এখন দিশেহারা।