প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন : দুর্বল ড্রেনেজ ও টয়লেট ব্যবস্থার কারণে মেহেরপুরে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব

 

মহাসিন আলী/মাজেদুল হক মানিক: পৌরসভার দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নোংরা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাবে মেহেরপুরে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের মেডিকেল দল। গত কয়েকদিন মেহেরপুর পৌরসভাসহ ডাররিয়া আক্রান্ত এলাকায় তথ্য সংগ্রহ শেষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের সাথে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান তারা। তবে পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি পরীক্ষা শেষে ডায়রিয়ার প্রকৃত উৎস জানানো হবে বলে সাংবাদিকদের জানান মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অলোক কুমার দাস। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সদের ওই বিফ্রিঙে মেডিকেল দলের সদস্য ডা. মোনালিসা বলেন, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড, ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকার পরিবেশ ও মরসুমি ফল পরীক্ষা করা হয়। প্রাথমিক প্রতিবেদনের ফলাফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেহেরপুর পৌরসভার যে এলাকাগুলোতে ডায়রিয়ার প্রকোপের ঘটনা ঘটেছে সে এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুবই নাজুক। বসতবাড়ির ময়লা-আবর্জনা ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। ফলে নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ডায়রিয়ার জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। এ ব্যাপারে পৌর মেয়রকে জানানো হলে তিনি পয়ঃনিষ্কাশনের উদ্যোগ নিয়েছেন। বাসাবাড়ির টয়লেটের অবস্থা আরো খারাপ উল্লেখ করে ডা. মোনালিসা বলেন, টয়লেটের গোড়া ও আশেপাশে অপরিষ্কার থাকায় রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়া যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তারা জানা সত্ত্বেও ওরস্যালাইন পান করেননি এবং শুরুতে যথাযথ চিকিৎসার উদ্যোগ নেননি। ফলে ডায়রিয়া মহামারি আকার ধারণের পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। জনগণের মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মেডিকেল দলের প্রধান বলেন, পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি থেকে ডায়রিয়ার জীবাণু ছড়িয়েছে কি-না তা পরীক্ষার জন্য পানি সংগ্রহ করা হয়েছে। পানি পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেলে ডায়রিয়ার প্রকৃত উৎস সম্পর্কে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ দিন ধরে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ব্যাপকহারে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়। প্রতিদিনই ৫০ থেকে ৬০ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এতে ওষুধের চরম সঙ্কট দেখা দেয়। এর মাঝে ১৩ ও ১৪ মে দু’জনের মৃত্যু হলে নড়েচড়ে বসে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। ওই টিম গত ১৬ মে জেলার বিভিন্ন স্থানে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে।