সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি : টিআইবি

স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ব্যাপকভাবে নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ টিআইবি। নির্বাচন পরবর্তী পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট প্রকাশ করে টিআইব বলেছে, ইসির যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে তিন সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি।

গতকাল সোমবার প্রকাশিত সংস্থাটির এক গবেষণা প্রতিবেদনে প্রার্থীদের নির্বাচনী ব্যয়ে ব্যাপক অনিয়ম দেখতে পেয়েছে টিআইবি। টিআইবি’র  ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্য সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা বলেছেন, এই নির্বাচনের সকল ব্যর্থতার দায়ভার একমাত্র নির্বাচন কমিশনের।

টিআইবির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিতে সহায়তা করেছে নির্বাচনী কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক, ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন নির্বাচনে সমর্থন লাভ এবং প্রচার প্রচারণার জন্য অর্থব্যয়ে এই দু ক্ষেত্রেই অনিয়ম দেখতে পেয়েছে টিআইবি। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে নির্বাচনে সমর্থন লাভের জন্য অর্থ লেনদেনের বিরাট কোনো অভিযোগ না থাকলেও চট্টগ্রামে এ সংক্রান্ত বহু নজির রয়েছে। সেখানে দলের সমর্থন, দলের প্রভাবশালী নেতাদের সমর্থন আদায় এবং প্রতিপক্ষের প্রভাবশালী নেতাদের নিউট্রালাইজ করতে বিরাট অংকের অর্থ লেনদেন হয়েছে বলে টিআইবির গবেষণায় উঠে এসেছে। চট্টগ্রামে একেকজন কাউন্সিলর প্রার্থী গড়ে তেইশ লাখ টাকা এবং ঢাকায় গড়ে ষোল লাখ টাকা করে ব্যয় করেছেন। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারণার জন্য যে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের সীমা রয়েছে, সেটা প্রায় কোনো প্রার্থীই মানেননি। অনিয়মের ক্ষেত্রেও চট্টগ্রাম এগিয়ে রয়েছে। ঢাকার ৯ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মাত্র একজন নির্ধারিত অর্থ সীমার মধ্যে ব্যয় করেছেন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণে নির্ধারিত সীমার চেয়ে এগারোগুণ বেশি অর্থ নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়া, কাউন্সিলর পর্যায়েও এ সংক্রান্ত ব্যাপক অনিয়ম ঘটেছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু প্রার্থীরাই নয়, নির্বাচন কমিশনও অনিয়ম করেছে। তারা আইনানুগভাবে অনিয়মের বিরুদ্ধে যেসব ব্যবস্থা নিতে পারতো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেটি না করে তারা সরকার সমর্থিত প্রার্থীদের প্রতি নমনীয় আচরণ করেছে। ফলে তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিতে সহায়তা করেছে নির্বাচনী কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সোমবার ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে শামসুল হুদা বলেন, আইন অনুযায়ী এই নির্বাচনকে নির্দলীয় বলা হলেও কার্যত এটি ছিলো দলীয় নির্বাচন। মূলত এর ফলেই এতো অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ নিতে না পেরেই বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে গেছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন যদি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হয় তাহলে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ ও আইন পরিবর্তন করে দলীয়ভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের করা উচিত।