কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ইবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ ছিনতাই

 

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভর্তিচ্ছু এক শিক্ষার্থীর কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মুক্তিযোদ্ধা সনদ ছিনতাই করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদ ভবনে বিশেষ কোটায় ভর্তি চলাকালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের কাছে কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করলে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতির কক্ষে বিশেষ কোটায় ভর্তি সাক্ষাৎকার চলছিলো। মহসিন হোসাইন বিশেষ কোটায় (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) ভর্তিচ্ছু একজন শিক্ষার্থী। তার ভর্তি পরীক্ষা ও বিশেষ কোটার রোল নম্বর যথাক্রমে ১৩৬৭৬ ও ৪৪৮। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ কোটার ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, মহসিন হোসাইন জি ইউনিটের তৃতীয় শিফটে মেধা তালিকায় চতুর্থ স্থান অধিকারী। সে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে।

জানা গেছে, রোববার সকালে মহসিন হোসাইন ব্যবসায় অনুষদে ভর্তির সাক্ষাৎকারের জন্য অপেক্ষা করছিলো। ভর্তিচ্ছু মহসিনের অভিযোগ, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র শিশির ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীরা তার কাছ থেকে মুক্তিযোদ্ধা সনদসহ অন্যান্য কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং কপালের দু দিকে পিস্তল ঠেকিয়ে ভয় দেখায়। অভিযোগ রয়েছে, বাবু ও তার সহযোগীরা মহসিনকে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের বাথরুমে আটকে রাখে। বিষয়টি কাউকে না বলার শর্তে তাকে পরে ছেড়ে দেয়া হয়। জানা গেছে, বাথরুম থেকে ছাড়া পাওয়ার পর মহসিন বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনকে জানায়। ড. মাহবুবুল আরফিন বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিকে জানান। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ জানায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন বলেন, ‘ছেলেটি আমার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছিলো। আমি তাকে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।’ প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত ম লোকমান হাকিম বলেন, ‘ছেলেটি বলা হয়েছে, কেউ যদি তাকে কোনো প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে থাকে তাহলে তার সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ দিতে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাওয়া মাত্র অভিযুক্তের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ওই ছেলের ভর্তির ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা শিশির ইসলাম বাবু বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে আজগবি ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বেড়াচ্ছে। প্রকৃত বিষয় হলো-আমি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদে আমারই এক ছোট ভাইকে ছাড়িয়ে আনতে গিয়েছিলাম। কে বা কারা তাকে ব্যবসায় অনুষদের বাথরুমে আটকে রেখেছিলো বলে আমাকে খবর দেয়া হয়েছিলো। মহসিন নামের কোনো ছেলের সাথে আমার কথা হয়নি।’