আলমডাঙ্গায় ৩ জনসহ সারাদেশে নিহত ১৫

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে বৃষ্টির সাথে বজ্রপাত : তাপমাত্রা বৃদ্ধি

 

স্টাফ রিপোর্টার: সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বজ্রাপাতে কৃষক, স্কুলছাত্র ও নারীসহ ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আলমডাঙ্গার রায়লক্ষ্মীপুরে মানোয়ার হোসেন নামের এক কৃষক, শিশিরদাড়ি গ্রামের ওয়াজেদ আলী নামের এক কৃষক নিহত ও শহিদা খাতুন নামের গৃহবধূ আহত হন। বকশিপুরে গ্রামের শাহিন নামের এক যুবক নিহত ও একটি গরু মারা যায়। শৈলকুপায় ইন্তাজ আলী নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মাগুরা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেনের ছেলে মলিন, আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের মোক্তার মীরের ছেলে সিন্দবাদ ও গোপালপুরের ইবাদ উল্লাহ নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ও সন্ধ্যায় বৃষ্টির সময় এ ঘটনা ঘটে।

ঢাকার চন্দ্রিমা উদ্যানে ক্রিকেট খেলা অবস্থায় বাদল নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলায় শহিদুল্লা নামে এক স্কুলছাত্র এবং  ইঞ্জিন মিয়া নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় মাঠে কাজ করার সময় নিহত ২ জন এবং আহত হয়েছ ৩ জন। তবে তাদের নাম পরিচয় এখনো জানা যায়নি। সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকায় মায়ারুন নামে এক নারী এবং মৌলভীবাজারে সফর মিয়া নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে আরিফ হোসেন নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার সাথে আহত হয়েছে আরো দু যুবক।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ অবস্থান করছে যার বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগরে পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী ও কুমিল্লা অঞ্চলসহ রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা এবং সিলেট বিভাগের দু এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের অনত্র আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তাপপ্রবাহ, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলসহ খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, ঈশ্বরদী, ও রংপুর, দিনাজপুর, সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু হতে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অবাহত থাকতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্র ছিলো যশোর ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো সিলেটে ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিলো ২৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় পৃথক ৩ গ্রামে বজ্রপাতে এক শিশুসহ ৩ জন মারা গেছে। এ সময় আহত হয়েছেন ২ মহিলা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে বৃষ্টিপাতসহ বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু ঘটেছে।

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার আলমডাঙ্গা এলাকায় সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে বৃষ্টিপাতসহ বজ্রপাতে আলমডাঙ্গা বকশিপুরের ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিশুপুত্রের মৃত্যু হয়েছে। বকশিপুর গ্রামের আজিজুলের ৩ সন্তানের মধ্যে বড় ছেলে ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া শাহীন মাঠ থেকে সন্ধ্যার পূর্বে গরু আনতে যায়। গরু নিয়ে ফেরার পথে তার নিকটবর্তী স্থানে বজ্রপাত ঘটে। এতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ে সে। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে আলমডাঙ্গায় ডাক্তারের নিকট নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু ঘটে।

একই সময়ে উপজেলার শিশিরদাড়ি গ্রামে বজ্রপাতে আজ্জেত আলী নামে (৫০) এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ্জেত আলী মৃত আইজ উদ্দীনের ছেলে। এ সময় একই গ্রামের পৃথক পাড়ার মোজামের স্ত্রী শাহিনা (২৫) ও মঞ্জুর স্ত্রী মাহিরন নেছা আহত হয়েছেন। এছাড়া প্রায় একই সময়ে রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে মানোয়ার হোসেনের (৪০) বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে। নিহত মানোয়ার ২ সন্তানের জনক।

শৈলকুপা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপায় বজ্রাঘাতে ইন্তাজ আলী (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়নের কুমিরাদহ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইন্তাজ আলী ওই গ্রামের মৃত মোজাহার শেখের ছেলে।

এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার বিকেলে মাঠে নিজের জমির ধান কাটছিলেন ইন্তাজ আলী। হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করলে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। হাটফাজিলপুর পুলিশ ক্যাম্পের উপপরিদর্শক (এসআই) জামিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।