চুয়াডাঙ্গা বেগমপুরের কোটালী ও হরিশপুর গ্রামে দালালের খপ্পরে পড়ে পানিপথে মালয়েশিয়ায় গিয়ে ৪ যুবক নিখোঁজ

স্টাফ রিপোর্টার: থাইল্যান্ডের গণকবর থেকে বিভিন্ন দেশের অভিবাসীর লাশ উদ্ধার করা হচ্ছে। পানি পথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পরিণতি কি হতে পারে? কয়েক দিন ধরে বিশ্ব মিডিয়ায় থাইল্যান্ডের গণকবরের খবর ফলাও করে প্রচার করা হয় হলেও থেমে নেই দালালচক্র। গোপনীয়তা রক্ষা করে দালালরা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কাজ। দালালের খপ্পরে পড়ে পানিপথে মালয়েশিয়ায় গিয়ে দু মাস অতিবাহিত হলেও সন্ধান মেলেনি চুয়াডাঙ্গা সদরের কোটালী ও হরিশপুর গ্রামে ৪ যুবকের। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোতে চলছে চাপাকান্নার সুর। সন্তানদের ভাগ্যে কি ঘটেছে জানতে অনেকেই হচ্ছে কবিরাজের দ্বারস্থ। সাংবাদিকদের নিকট মুখ খুললে সন্তান ফেরত না পাওয়ার হুঁশিয়ারি দালালদের।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের কোটালী গ্রামের দুধ বিক্রেতা তাহাজ আলীর ছেলে রবজেল হোসেনকে (২২) দু মাস আগে ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে পানি পথে মালয়েশিয়ায় নেয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে কক্সবাজারে নিয়ে যায় একই গ্রামের আব্দুল গনির ছেলে মানবপাচারকারী দালাল মোস্তবারী। কারণ মোস্তবারির এক ভাই ছালাউদ্দিন একই পথে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছে। যাওয়ার পরপরই রবজেলের পিতা ছেলেকে ফেরত আনতে মোস্তবারীকে চাপ দেয়। মোস্তবারী রবজেলকে ফেরত আনতে ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। রবজেলের পিতা ১১ হাজার টাকা তুলে দেয় মোস্তবারীর হাতে। ছেলেকে ফেরত তো দূরের কথা দু মাস অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত কোনো সন্ধান মেলেনি রবজেলের। ছেলের খবর জানতে গেলে উল্টো চোখ রাঙানি দেখতে হয়। রবজেলের মা বলেন, মন মানছে না তাই দর্শনা জয়নগরের এক কবিরাজের নিকট গিয়ে ছিলাম। শুধু জানতে ছেলে বেঁচে আছে না মরে গেছে।

অপরদিকে একই ইউনিয়নের হরিশপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আনারুল, ঠাণ্ডু মণ্ডুলের ছেলে শান্তি ও রমজানের ছেলে সিদ্দিক আলমডাঙ্গা টেংরামারীর জনৈক এক দালালের খপ্পরে পড়ে দু স আগে পানিপথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমায়। যাওয়ার ৫ দিনের মাথায় দু লাখ ৬০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয় দালালরা। আর এ টাকা বুঝ করে নেই হরিশপুর গ্রামের সিদ্দিকের স্ত্রী লাখিয়া বেগম। টাকা পরিশোধের পর থেকে দালালরা সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে কারো জানা নেই। এসব বিষয় সাংবাদিকদের জানালে সন্তানদের আর ফেরত পাওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে লাখিয়ার ভায়েরা। তাই সাংবাদিকরা ভুক্তভোগী পরিবারদের সাথে কথা বলতে গেলে চুপ থাকেন। সন্তানদের অপেক্ষায় পরিবারগুলোতে চলছে চাপা কান্না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হরিশপুর গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তি বলেন, সিদ্দিকের স্ত্রী লাখিয়া বেগমের বাড়ি টেংরামারী গ্রামে। তার ভাই মালয়েশিয়ায় থাকে সেই দালালি করে বিদেশে লোক নিয়ে যায়।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের ছোটশলুয়া গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আলোচিত বিপুল হোসেন মানবপাচারের দায়ে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তার প্রতারণার শিকার হওয়া অনেক কাহিনি প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকা এবং বিপুলের স্বীকারোক্তি দেয়ার নামের ব্যক্তিরা গাঢাকা দিয়েছে।