মধুমাসে ফলফলারি স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে বিশেষ উদ্যোগ এবং

গরমে ঘেমে গা গোলানো গ্যাদগেদে অবস্থা হয়ে থাকলেও এ সময়ে ফলফলারির দিকে তাকালেই জুড়িয়ে যায় প্রাণ। টসটসে একটা আম খেলে ভাতঘুমটাও যেনো জেকে বসে। আম, জাম, লিচু, কাঁঠালসহ রকমারি ফলের সমাহার বলেই জ্যৈষ্ঠকে আদর করে মধুমাস বলা হয়। বোশেখের আজ ২৭ দিন। ৫ দিন পরই জ্যৈষ্ঠ বরণ।
আর কয়েকদিন পরই শুরু হচ্ছে মধুমাস। এরই মাঝে আম-লিচুতে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ রোধে নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন আমবাগানের মালিকদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে ফলে রাসায়নিক পদার্থের প্রলেপ বা প্রয়োগের মাধ্যমে স্বাস্থ্যের জন্য কতোটা ক্ষতি করে থাকি সে সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। একই সাথে বলা হচ্ছে, কেউ ফল অসময়ে পেড়ে রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগে পাকিয়ে বাজারজাত করলে জেল-জরিমানাসহ ওই ধরনের ক্ষতিকর আম বাজেয়াপ্ত করা হবে। বড় বড় শহরে নিলেও রাস্তায় পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়ার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অবশ্যই এ ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন সমাজের জন্য ইতিবাচক। কেননা, বুঝে না বুঝে বাড়তি লাভের আশায় অনেকেই আমে রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগ করেন। তাদের কেউ কেউ ধরা পড়ে জরিমানা গোনার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। কেউ কেউ পুঁজি হারিয়ে পথে বসেন।
সচেতন করার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ সমাজের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক ফল বয়ে আনে। এর পূর্ণ সুফল তখনই ভোক্তারা ভোগ করে, যখন ভেজাল বা অনিয়মের প্রকৃত কারণ শনাক্ত করে সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়। নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, আমরা এখনও পচনশীল ফল ও কৃষি উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারিনি। বাগানের ফল স্বাস্থ্যসম্মত রেখে পাকাতে গেলে সব বাগানের ফলই তো এক সাথে পাকে। সকলেই যখন এক সাথে বিক্রির জন্য ব্যতিব্যস্ত তখন দাম পাওয়া যায় না। বাজারের এটাই ধর্ম। চাহিদার চেয়ে বেশি থাকলেই বাজার পড়া, টান থাকলেই চড়া। মূলত এ কারণেই অনেক অসাধু অর্থলিপ্সু বাগানমালিক রয়েছেন যারা আগাম বাজার ধরার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করেন। অবৈধভাবে রাসায়নিক পদার্থের প্রলেপ, প্রয়োগ করে বাজারে বিক্রি করেন। তা খেয়ে জটিল রোগে ভুগতে হয় ভোক্তাদের। অবশ্য শুধু আমের বেলায়ই যে এটা হচ্ছে তা নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভেজালের ছড়াছড়ি। মাছে? ফরমালিন।
আইনের যথাযথ স্বচ্ছ প্রয়োগ নিশ্চিত করা খুবই জরুরি। তার আগে সচেতন করতে বিশেষ উদ্যোগও দরকার। চুয়াডাঙ্গা প্রশাসন আম স্বাস্থ্যকর রাখতে যে পদক্ষেপ নিয়েছে তা সাধুবাদ পাবার দাবি রাখে। লিচু, বেগুন, পটল, শশাসহ সবজিতে কীটনাশক দিয়ে ক’দিন পর তা তুলতে হয় তাও জানানো দরকার। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে প্রয়োজন হিমাগার।