থাইল্যান্ডের জঙ্গলে আরো ৩০ কবরের সন্ধান

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মালয়েশিয়ার সীমান্তের কাছে থাইল্যান্ডের সংখলা প্রদেশের প্রত্যন্ত এলাকার জঙ্গলের গভীরে অভিবাসীদের আরও ৩০টি কবরের সন্ধান পেয়েছে থাই পুলিশ। হাত ইয়াই জেলার বান ছালুং গ্রামের দীর্ঘদিন ধরে অব্যবহূত ওই সমাধিস্থলে রোহিঙ্গা অভিবাসীদের এনে আটক রাখত মানবপাচারকারী ও দালালেরা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এসব কবরের সন্ধান মেলে। খবর:ব্যাংকক পোস্টের। বান ছালুং গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই সমাধিস্থলটি অব্যবহূত ছিল। তারা জানান, সমাধিটিতে আগে মাত্র ছয়টি কবর ছিল। কিন্তু বছরখানেক ধরে সেখানে আরো ৩০টি নতুন কবর দেখতে পান তারা।

থাইল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, এ কবরগুলো দেখতে অনেকটা গত সপ্তাহে সাদাও জেলার পাদাংয়ের জঙ্গলে ২৬টি কবরের মতো। পুলিশ বলছে, কবরগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এখনো উন্মুক্ত করা হয়নি। এদিকে, গতকাল সংখলার রাত্তাফাম জেলার একটি রাবার বাগানে আরেকটি ক্যাম্পের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, সাতুন প্রদেশ থেকে সাদাও জেলার এই ক্যাম্পেও রোহিঙ্গা অভিবাসীদের আটক রাখা হতো। পরে তাদের সীমান্ত অতিক্রম করে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হতো। একইদিন পুলিশ সদস্যরা পেদাং বেসারের খাও কায়েউ পর্বতের কাছের বনাঞ্চল থেকে ১৩ রোহিঙ্গাকে আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা জানিয়েছে, পাচারকারীরা তাদের জঙ্গলে ফেলে চলে গেছে। তারা মিয়ানমার থেকে সাগর পথে সাতুন প্রদেশে এসেছিলো বলে জানায়। তাদের সীমান্তের কাছে আনা হলেও হঠাত করেই তাদের গাইড পালিয়ে গেছে। এর আগে বুধবার ১৭ জনকে উদ্ধার করা হয়।

গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণ কবরের সন্ধানের পর থেকে এখন পর্যন্ত দুই দফায় ৩২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একইসঙ্গে কয়েকজনকে জীবিতও উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জন বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন বলে জানিয়েছেন সেখান থেকে জীবিত উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি।

এদিকে মানব পাচার ও এসব নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থাইল্যান্ডের পুলিশ ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। ইতিমধ্যে পাঁচজনকে আটকের পর পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনই সরকারি কর্মকর্তা। এছাড়া ৩৮ পুলিশ কর্মকর্তাকে তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে বদলি করা হয়েছে।

থাইল্যান্ডের এই এলাকায় মানবপাচারকারীরা খুবই সক্রিয়। মালয়েশিয়া থেকে মাত্র কয়েক শ’ মিটার দূরে এই জঙ্গলের ভেতরে মানব পাচারকারীরা ক্যাম্প বানিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলো। এসব ক্যাম্পে লোকজনকে কখনো কখনো মাসের পর মাসও আটকে রাখা হয়। এ সময় পাচারকারীরা এসব লোকজনের পেছনে ফেলে আসা আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকেও অর্থ দাবি করে থাকে।