কারাবন্দী বিএনপি নেতা পিন্টুর ইন্তেকাল

পরিবারের অভিযোগ পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড

 

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু (৪৮) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি……………রাজেউন)। গতকাল রোববার দুপুরে বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। রামেক হাসপাতালের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিত্সক দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে পিন্টুর পরিবার ও বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, পিন্টুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বিএনপির দাবি উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তিনি বলেছেন, পিন্টুকে কারাগারের সব সুযোগ সুবিধাই দেয়া হয়েছিলো। কোনো ধরনের অবহেলা করা হয়নি। হঠাত অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়ার সময় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

বিএনপি নেতা পিন্টু বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ছিলেন। এছাড়া অবৈধ অস্ত্র লু্ণ্ঠনের মামলায় ঢাকার একটি আদালত তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু পৃথক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার। এরপর ২০ এপ্রিল তাকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার শাহাদত হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, গত ২০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে তাকে রাজশাহীতে পাঠানো হয়েছিলো। তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের ১০ নম্বর সেলে রাখা হয়। তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করলে গতকাল রোববার দুপুর ১২টা ২ মিনিটে তাকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রামেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের কর্তব্যরত চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি আরো জানান, দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালমর্গে তার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রহণের জন্য মৃতের স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয়া হয়েছে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে আজ (রোববার) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। পিন্টু তখনই মৃত ছিলেন। তার ধারণা, হাসপাতালে আনার পথে বা কারাগারেই পিন্টুর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।

নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু ছাত্রদলের সভাপতি থাকা অবস্থায় ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকার লালবাগ-কামরাঙ্গীর চর আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। তিনি ছিলেন দু ছেলের জনক। বড় ছেলে শাহরিয়া আহম্মেদ রাতুন পড়াশুনা করছেন কানাডার টরেন্টোর একটি বিশ্ববিদ্যালয়। ছোট ছেলে নাহান আহম্মেদ ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলের ছাত্র।