তিন সিটি নির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সদ্য সমাপ্ত তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে হয়েছে। এ নির্বাচনে সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী ও নাশকতাকারীদের বিজয় হয়নি, বিজয় হয়েছে গণতন্ত্রের। দেশের মানুষ বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা-সহিংসতা ও পুড়িয়ে হত্যার বিরুদ্ধে জনরায় দিয়েছে।

গতকাল বুধবার রাতে গণভবনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত দু মেয়র যথাক্রমে আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন এবং নির্বাচিত কাউন্সিলরদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাতে গণভবনে গিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিন সিটি নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় সব পর্যায়ের নেতাদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন। এ সময় সবার মুখে ছিলো বিজয়ের তৃপ্তির হাসি।

প্রধানমন্ত্রী আবারও ভোট কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগকারীদের ভোটের হারের দিকে দৃষ্টি দিতে বলেন। সিটি নির্বাচনে ৪৪ ভাগ ভোট পড়ার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, কারচুপি হলে এতো কম ভোট হবে কেন?

রাত পৌনে ৮টার দিকে প্রথমে সাঈদ খোকন এবং এর কিছু পরেই গণভবনে প্রবেশ করেন আনিসুল হক। গণভবনে প্রবেশ করেই উপস্থিত সকল নেতার সাথে কুশল ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দু মেয়র। শুরুতেই নবনির্বাচিত দু মেয়র উত্তর সিটি করপোরেশনের আনিসুল হক, দক্ষিণের সাঈদ খোকন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং দোয়া কামনা করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীও দলের নবনির্বাচিত দু মেয়রকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম, প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, কৃষি ও সময় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয়, মহানগর এবং সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপি হলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা এতো ভোট পেত না। কারচুপির যে অভিযোগ তুলে বিএনপি ভোট বর্জন করেছে তা সত্য হলে তাদের মেয়র প্রার্থীরা লাখ লাখ ভোট পেলেন কী করে? তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনো বিএনপির মতো একটি কুৎসিত দলকে ভোট দেবে না। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ভবিষ্যতে দেশবাসী তাদেরকে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সিটি নির্বাচনের মতো প্রত্যাখ্যান করবে। গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিএনপি-জামায়াতের হরতাল-অবরোধে পেট্রোল বোমায় নিহতদের স্বজন এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত বাস মালিকদের অর্থ সহায়তা প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সেই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে পেরেছি। ইলেকট্রনিক ভোটিং সিস্টেম করতে চেয়েছিলাম, এতে কারচুপি করার সুযোগ থাকে না। কিন্তু খালেদা জিয়া চাননি। খালেদা জিয়ার জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার কারণে মানুষ কাজ করে খেতে পারেনি। দোকানপাট, বাজার বন্ধ ছিলো, খেটে খাওয়া মানুষ কষ্ট পেয়েছে। তিনি বলেন, বিএনপি মানুষ মারে, আর মানুষ তাদের ভোট দেয়। তাদের কি বিবেচনাও নেই? অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২৫৮টি চেকে মোট ১০ কোটি ৪৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা প্রদান করেন।