শার্শায় ঝড়ে উপড়ে পড়া সরকারি গাছ চুরি করতে নিষেধ করায় দুজনকে কুপিয়ে খুন : চারজন আহত

স্টাফ রিপোর্টার: যশোরের শার্শা উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে গতকাল সকালে সন্ত্রাসীরা দু ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করেছে। তাদের রক্ষা করতে গিয়ে আরও ৪ জন আহত হয়েছেন। ঝড়ে উপড়ে যাওয়া সরকারি গাছ চুরি করতে নিষেধ করায় সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। হত্যাকাণ্ডের শিকার শমসের আলী বিশ্বাস (৬৫) ও আব্দুল্লাহ হোসাইন মল্লিকের (৪৫) বাড়ি রঘুনাথপুর গ্রামে। আব্দুল্লাহ হোসাইন বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের প্রাক্তন মেম্বার।

নিহত শমসের আলীর বড় ভাই সদর আলী ও একই গ্রামের পাঞ্জাব আলী জানিয়েছেন, রঘুনাথপুর-সাদিপুর রাস্তার পাশের একটি সরকারি বাবলা গাছ ঝড়ে উপড়ে পড়ে। পানি উন্নয়ন বোর্ড  এ গাছ রোপণ করেছিলো। একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ৪ ছেলে নাসু, গিয়াস উদ্দিন, আলাউদ্দিন ও ফুলছদ্দিন গতকাল সকাল ৭টার দিকে উপড়ে যাওয়া ওই বাবলাগাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছিলো। মাঠে ধান কাটতে যাওয়ার সময় আব্দুল্লাহ হোসাইন মল্লিক তাদের গাছ কাটতে নিষেধ করে বলেন, সরকারি গাছটি মসজিদে দেয়া হবে। একথা শোনার পর নাসু, গিয়াস উদ্দিন, আলাউদ্দিন ও ফুলছদ্দিন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আব্দুল্লাহ হোসাইনকে কুড়ুল ও ধারালো দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায়। এ সময় মাঠে ধান কাটছিলেন বৃদ্ধ শমসের আলী। ঘটনা দেখে তিনি আবদুল্লাহকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান। তখন তারা শমসের আলীকেও এলোপাতাড়ি কোপায়। খবর শুনে আব্দুল্লাহ হোসাইনের ছেলে সুমন হোসেন (২০), গোলাম সরদারের ছেলে হাফিজুর রহমান (৪২), সারজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ (২০) ও প্রতিবেশী আজগর আলী (৬৫) তাদের উদ্ধার করতে যান। সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে। এরপর গ্রামবাসী আহতদের উদ্ধার করে শার্শার নাভারণ বুরুজবাগান হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেয়ার সময় পথের মাঝে আব্দুল্লাহ হোসাইনের মৃত্যু হয়। নাভারণ হাসপাতালে ভর্তি করার পর শমসের আলী, সুমন হোসেন ও আজগর আলীর অবস্থার অবনতি ঘটে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। কিছুক্ষণ পর শমসের আলী মারা যান। ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুজ্জামান আজাদ সকাল সাড়ে ১০টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত আজগর আলী ও সুমন হোসেন যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও হাফিজুর  রহমান বুরুজবাগান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নিহত ও আহতরা পরস্পর আত্মীয়। এ ঘটনার পর  বেনাপোল পোর্ট থানার পুলিশ আব্দুল্লাহ হোসাইনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠান। পরে আব্দুল্লাহ হোসাইন ও শমসের আলীর ময়নাতদন্ত শেষে লাশ দাফনের উদ্দেশে গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। আশপাশের গ্রাম থেকে শ শ মানুষ নিহত ও আহতদের বাড়িতে ভিড় জমান। শমসের আলীর স্ত্রী আবেদা বেগম হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্ত্রাসীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে বলেছেন, ওই সন্ত্রাসীরা দু বছর আগে তাদের এক ভাইকে হত্যা করে অন্যের নামে মামলা দায়ের করেছিলো।