সর্বশক্তিতে আওয়ামী লীগ গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার: আসন্ন তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ার আগে থেকেই ভোটযুদ্ধে তারা। অবশ্য পুরোদমে তারা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন গতকাল থেকে। প্রার্থীদের সঙ্গে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী। জোটভুক্ত ১৪ দলের নেতা-কর্মীদেরও দেখা যাচ্ছে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে। তিন সিটি নির্বাচনের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অন্যদিকে প্রতীক পাওয়ার পরও বিএনপির অধিকাংশ কাউন্সিলর প্রার্থী এখনো গ্রেফতার আতঙ্কে মাঠছাড়া। অধিকাংশের বিরুদ্ধেই ফৌজদারি মামলার খড়গ ঝুলছে। এদিকে জামিন না পাওয়ায় এখনো মাঠে নামতে পারেননি ঢাকা সিটি দক্ষিণে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাস। উত্তরে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল গতকাল প্রথম অপরিকল্পিত অবস্থায় মাঠে নেমেছেন। অবশ্য কৌশল নির্ধারণে কাজও করে যাচ্ছেন তিনি। একই অবস্থা চট্টগ্রামেও। সেখানে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়ালেও বিএনপি সমর্থিত অধিকাংশ কাউন্সিলর প্রার্থী এখনো আড়ালে। অবশ্য বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলম প্রকাশেই প্রচারযুদ্ধে মাঠে রয়েছেন। ঢাকা ও চট্টগ্রামে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরাও প্রচার-প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

মাঠে আওয়ামী লীগ: ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদের বিজয় অর্জনে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ ক্ষেত্রে দু সিটিতে একক প্রার্থী দিয়ে আটঘাট বেঁধে নির্বাচনী কাজ করছে দলটি। বিজয় নিশ্চিত করতে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীদের। সিটি নির্বাচনের লড়াইয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র পদে একক প্রার্থী হিসেবে রাত-দিন মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন দক্ষিণে সাঈদ খোকন ও উত্তরে আনিসুল হক। ইতোমধ্যে তাদের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, এমপি ও বর্তমান সংসদ সদস্যরা। এ ছাড়া দু-এক দিনের মধ্যে সারাদেশের এমপিরাও ঢাকার দু সিটির নির্বাচনের কাজে মাঠে নামবেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন মাঠে থাকতে। এছাড়া সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঠে কাজ করতে কয়েক পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এদিকে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগেই দক্ষিণ সিটিতে মেয়র পদে একক প্রার্থী নিশ্চিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগেই প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করে ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে মেয়র পদে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী সেলিম। ফলে আগেই দক্ষিণে একক প্রার্থী হিসেবে কাজ শুরু করেন সাঈদ খোকন। এরপর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সারাহ বেগম কবরীর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের মধ্যদিয়ে উত্তর সিটিতেও একক প্রার্থী নিশ্চিত হয়েছে। কবরী সরে দাঁড়ানোয় এ সিটিতে মেয়র পদের লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন আনিসুল হক। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে কবরী সাংবাদিকদের বলেন, দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, রাজনীতিতে একটা ডিসিপ্লিন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান রেখেই নিজেকে সরিয়ে নিলাম। এছাড়া উত্তরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আনিসুল হক সহযোগিতা চাইলে তার পাশে দাঁড়াবেন বলেও জানান সাবেক এ এমপি। এদিকে বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় আওয়ামী লীগ নিজেদের মেয়র প্রার্থীর বিজয় সুনিশ্চিত করতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ঢাকার দুই সিটির জন্য দুটি নির্বাচন পরিচালনায় কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী আনিসুল হকের নির্বাচন সমন্বয়কারী হিসেবে কাজ করছেন। ড. মো. আবদুর রাজ্জাক এমপি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী সাঈদ খোকনের নির্বাচন সমন্বয়কারীর দায়িত্বে রয়েছেন। এছাড়া ঢাকার ১৫টি আসনে ১৫টি নির্বাচন পরিচালনায় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও দেয়া হয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে খোলা হয়েছে মনিটরিং সেল। সেখান থেকে পর্যবেক্ষণ করা হবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের নির্বাচন। সূত্রমতে, আসন্ন ঢাকা সিটি নির্বাচনকে মর্যাদার লড়াই হিসেবে মনে করছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। বিএনপি এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় এবং আওয়ামী লীগের ঘরে ফলাফল তুলতে সব আটঘাট বেঁধেই মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল।

জানা গেছে, ঢাকার দু সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে সুবিধাজনক অবস্থানেই রয়েছে আওয়ামী লীগ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘ক্লিন ইমেজের’ সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি আনিসুল হককে দলের প্রার্থী করে আগেই চমক দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নতুন প্রজন্মের তরুণ নেতা সাঈদ খোকনকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে তরুণদের উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ ঘোষিত দুই মেয়র প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলের মধ্যে প্রকাশ্য কোনো বিরোধিতা নেই। যেটুকু মান-অভিমান ছিল, বর্তমানে তাও কেটে গেছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সব পর্যায়ের নেতা সিটিতে দলের বিজয় ঘরে তুলতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তরের আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আনিসুল হক টেবিল ঘড়ি প্রতীকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামছেন। গতকাল প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর আজ তিনি নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবেন। খিলক্ষেতের লোটাস কামাল টাউয়ারে সমস্যা চিহ্নিত, এবার সমাধানযাত্রা শীর্ষক এ ইশতেহার আজ বেলা ১১টায় ঘোষণা করার কথা রয়েছে।

সমস্যায় বিএনপি: সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে একক প্রার্থী ঘোষণা করেও সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিএনপি। গ্রেফতার আতঙ্কে তিন সিটির অধিকাংশ কাউন্সিলর প্রার্থী এখনো নির্বাচনী মাঠের বাইরে। প্রতীক পাওয়ার পরও এখনো ভোটারদের কাছে যেতে পারছেন না তারা। প্রার্থী ঘোষণার তিন দিনেও প্রচারণায় নামতে পারেননি ঢাকা সিটি দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাস। এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন তিনি। অর্ধশতাধিক মামলার খড়গ ঝুলছে তার কাঁধে। এখনো জামিন পাননি তিনি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বয়কটও করতে পারে বিএনপি। তবে সমান সুযোগের জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এদিকে মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইতে মাঠে নামছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে সোমবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক পরিচিতি সভায় যোগ দেবেন তিনি। এর আয়োজক আদর্শ ঢাকা আন্দোলন। এ সময় মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাইবেন বেগম জিয়া। নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানাবেন তিনি। এর আগে আগামীকাল আদর্শ ঢাকা আন্দোলনের ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিএনপি সমর্থিত একক প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

এ প্রসঙ্গে সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, রোববার থেকেই মূলত আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা মাঠে নামবেন। সোমবার তাদের পরিচিতি সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যোগ দেবেন। এর পর থেকে পুরোদমে প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারে থাকবে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন। জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা সিটি উত্তরে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালকে প্রার্থী ঘোষণা করার পর দলের ভেতরে-বাইরে তোলপাড় শুরু হয়। গণমাধ্যমে এ ঘোষণা শুনে দলের নেতাদের অনেকেরই মনোবল ভেঙে পড়ে। স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদের বড় একটি অংশ তাবিথকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এখনো মেনে নিতে পারছেন না। অবশ্য এ নিয়ে তাদের কেউই মুখ খুলছেন না প্রকাশ্যে। তবে তাবিথের পক্ষে তারা আদৌ কাজ করবেন কি না- এ নিয়ে শঙ্কায় বিএনপির নীতিনির্ধাকরা। দু সিটির বিজয় নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন নেতা-কর্মীরা। বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতারা বলছেন, বিএনপি কি এতই দেউলিয়া যে উত্তরে আবদুল আউয়াল মিন্টু ছাড়া অন্য কোনো নেতা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারলেন না? কেন অন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহে বাধা দেয়া হলো- এ প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই। তাদের মতে, তাবিথ আউয়াল বিএনপির প্রাথমিক সদস্যও নন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, ঢাকা সিটি উত্তরে বিএনপির প্রার্থী অপেক্ষাকৃত দুর্বল হয়েছে- এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

একদিকে মির্জা আব্বাস অন্যদিকে তাবিথ মেয়র প্রার্থী হিসেবে বেমানান। এছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত উত্তরের প্রার্থী আনিসুল হকের সঙ্গেও এই প্রার্থীর তুলনা করা যায় না। এরপরও বিএনপি চেয়ারপারসন এই প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা ঠিক হবে না। ঢাকা সিটি উত্তরে বিএনপির সাবেক কয়েকজন এমপি জানান, তাবিথ আউয়াল ঢাকা উত্তরের অলিগলিও চেনেন না। সাম্প্রতিক সময়ে তাকে মিডিয়ার সুবাদে নেতা-কর্মীরা চিনতে পারছেন। ভোটাররা দূরের কথা, নেতা-কর্মীরাও এর আগে কোনো দিনই তাকে দেখেননি। এ অবস্থায় তাকে নিয়ে ভোট করা কঠিন হয়ে যাবে। ক্লিন ইমেজের পরিচিত কোনো নেতাকে উত্তরে প্রার্থী ঘোষণা করা হলে বিএনপির বিজয় নিশ্চিত ছিল বলে মনে করেন তারা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় সর্বশক্তিতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। জোয়ার সৃষ্টি করতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তারা। আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাগরিক কমিটির প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিন এভাবেই দিনরাত ভোটারদের চোখের সামনে হাজির হচ্ছেন। তবে গ্রেফতার আতঙ্ক ভর করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি শিবিরে। গ্রেফতারের ভয়ে দলটির অনেকেই এখনো আত্দগোপনে রয়েছেন। অনেকে আবার জামিনের জন্য ছোটাছুটি করছেন আদালতপাড়ায়। এতে নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই ছন্দপতন ঘটছে বিএনপিতে। প্রচারণায় যাদের মাঠে থাকার কথা ছিল, এমন বহু নেতারই এখন দেখা মিলছে না। জানা গেছে, ৫ জানুয়ারির পর থেকে টানা চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংস বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা মামলায় নিম্ন ও উচ্চ আদালত কোনোখানেই জামিন হয়নি। এর মধ্যে ১৮ মার্চ থেকে ১ এপ্রিল পর্যন্ত হাইকোর্ট ছুটিতে ছিলেন। এ কারণে ওই সময়ের মধ্যে ২০-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারেনি। বিএনপি নেতারা বলছেন, জামিনের জন্য অনেকেই রাজধানীতে রয়েছেন। জামিন পেলেই নির্বাচনী মাঠে সরব হবেন নেতা-কর্মীরা। পুলিশ বলছে, যাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে অথচ জামিনে নেই, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। কে কোন দল করছেন, সেটি বিষয় নয়।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ও প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, মামলায় জর্জরিত নেতা-কর্মীরা রয়েছেন গ্রেফতার আতঙ্কে। নেতা-কর্মীদের বাসাবাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে। অনেক নেতা-কর্মী আবার ঢাকায় গিয়েছেন জামিনের জন্য। এর পরও তাদের মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলমের জন্য প্রচারণায় উপস্থিতি সন্তোষজনক। চসিক নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার পরই নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হয় বন্দরনগরী চট্টগ্রামে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ১৪ দলের সমর্থনপুষ্ট মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, সাবেক মন্ত্রী ডা. আফসারুল আমিন এমপি, এম এ লতিফ এমপি, সামশুল হক এমপি, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক মিয়াসহ অন্য নেতারা প্রচারণার মাঠে নেমে পড়েছেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনও এ প্রচারণার অংশ হয়েছে ইতোমধ্যে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম এসেছেন কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, এসএম কামাল ও আলাহউদ্দিন নাসিম। মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনও অংশ নিচ্ছেন প্রচার-প্রচারণায়। নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে পূর্ণ শক্তি নিয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে নামায় আ জ ম নাছিরের পক্ষে জমজমাট প্রচারণা চলছে নগরীতে।

এদিকে ২০-দলীয় জোটের পক্ষে প্রচারণায় এ পর্যন্ত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মহানগর সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুবুর রহমান শামীম, নগর বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুল আলম ও জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকেই ঘুরেফিরে দেখা যাচ্ছে। প্রচারণায় নেই নগর বিএনপির সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি জামিনের জন্য ঢাকায় রয়েছেন বলে জানা জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা।