জামিন নিয়ে বাসা ফিরোজায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

স্টাফ রিপোর্টার: দীর্ঘ ৯২ দিন পর বাসায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়া। আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর তিনি সোজা বাসায় ফিরেন। ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর অন্যান্য দিনের মতো গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ২০ দলের পূর্বঘোষিত ৫ জানুয়ারির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সেদিন রাতেই কার্যালয়ের সামনে বেরিকেড দিয়ে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৫ দিন পর বেরিকেড তুলে নেয়া হলেও আন্দোলনের কৌশলগত কারণে কার্যালয় ছেড়ে যাননি খালেদা জিয়া। এরপর নানা নাটকীয়তায় ভরা রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলো গুলশান-২’র ৮৬ নম্বর সড়কে অবস্থিত বিরোধী জোট নেতার কার্যালয়টি। সন্তানের মৃত্যু, পেপার স্প্রেতে অসুস্থতা, কার্যালয়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, খাবার সরবরাহ বন্ধসহ নানা সীমাবদ্ধতার পরও কার্যালয় ছাড়েননি তিনি। সর্বশেষ সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে থাকে। জাতীয় নির্বাচনের আন্দোলনের পাশাপাশি সিটি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। সেই পরিবর্তিত পরিস্থিতির ধারাবাহিকতায় গতকাল আদালতে যান খালেদা জিয়া। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য সকাল নয়টা ৫৫ মিনিটের দিকে গুলশান কার্যালয় থেকে বের হন। ১০টা ৩৫ মিনিটে বকশিবাজার মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতে পৌঁছান তিনি। সোয়া ১১টার দিকে আদালত তার জামিন আবেদন মঞ্জুর ও আগামী ৫ মে সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন দিন ধার্য করেন। নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা শেষে দু মামলায় জামিন পান বিরোধী জোট নেতা। জামিন পাওয়ার পর খালেদা জিয়া সোজা ফিরে যান গুলশান ডিপ্লোমেটিক জোনের ৮৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি ফিরোজায়। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে তিনি বাসায় পৌঁছেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানান তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দরের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। দীর্ঘদিন পর খালেদা জিয়া বাড়ি ফিরবেন তাই শনিবার রাতেই ঝাড়া-মোছা করা হয় ফিরোজায়। পরিষ্কার করা হয় বাসভবনের সামনের ডালপালা ও সিসিটিভি ক্যামেরা। সকাল থেকে চেয়ারপারসনের নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত নিরাপত্তারক্ষী (সিএসএফ) সদস্যরা গুলশানের কার্যালয়ের ভেতর থেকে দফায় দফায় মালপত্র বের করে ছোট-বড় কিছু ব্যাগে করে ফিরোজায় নিয়ে যায়। দীর্ঘ তিন মাস ধরে খালেদা জিয়ার সাথে গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করা নেতাকর্মীরাও নিজ নিজ বাসায় ফিরে যান। ওদিকে আদালতে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশিবাজার এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মোতায়েন করা হয় পুলিশ, ৱ্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য।

বাসায় ফিরেই বিশ্রামে খালেদা: খালেদা জিয়া যখন আদালতে তখন বাসা গোছগাছ করে তার জন্য অপেক্ষা করেন স্বজনরা। সময় তখন বেলা ১২টা ২০ মিনিট। আদালত থেকে সোজা গুলশান-১ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি ফিরোজার সামনে এসে দাঁড়ায় খালেদা জিয়ার গাড়িবহর। দীর্ঘ তিন মাস পর বাসায় ফিরেছেন তিনি। সেখানে তাকে স্বাগত জানান তার সেজ বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দর, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। ঝাড় মোছা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে আগেই পরিপাটি করে রাখা হয়েছিলো বাসা। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, গাড়ি থেকে নেমেই তিনি এক নজর দেখে নেন চারদিকে। বাসায় ফেরার সময় অনেকটা স্বাভাবিক ছিলেন খালেদা জিয়া। গাড়ি থেকে নেমেই তিনি বলেন, অনেকদিন পর সূর্যের আলো দেখলাম। তারপর স্বজনদের সাথে দোতলার ড্রইং রুমের সোফায় গিয়ে বসেন। বাসার দেয়ালে জিয়া পরিবারের বেশ কিছু পারিবারিক ছবি রয়েছে। বিশেষ করে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অনেকগুলো ছবি টাঙানো রয়েছে। বাসায় ফিরেই তিনি আরাফাত রহমান কোকোর ছবির দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলেন অনেকক্ষণ। এ সময় তিনি বিষণ্ণ হয়ে পড়েন। বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারি না, আমার কোকো নেই। এক পর্যায়ে স্বজনরা কথা বলে তার বিষণ্ণতা কাটান। পরে ড্রইংরুমে বসেই বোন, ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী, ভাগ্নে স্ত্রী এবং স্বজনদের সাথে ফলের জুস খান। তাদের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলেন। এরপর বিশ্রামের জন্য তিনি চলে যান নিজের বেডরুমে। বাসায় দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানান। এদিকে খালেদা জিয়ার বাসায় ফেরাকে কেন্দ্র করে রান্নাবান্নার জন্য সকালে বাজার করা হয়। দুপুরে খাবার জন্য ভাত, মাছ, ভাজিসহ কয়েক পদের সবজির তরকারি রান্না করা হয়। তবে দুপুরে খাবার খান না খালেদা জিয়া। ফলের জুস খাওয়ার পর তিনি বিশ্রামে চলে যান। অন্যদিকে তার সেজ বোনসহ বাসায় যাওয়া দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানা, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস ও নিরাপত্তা প্রধান লে. কর্নেল (অব.) আবদুল মজিদসহ অন্যরা খালেদা জিয়ার বাসাতেই দুপুরের খাবার খান। আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে গতকাল ভোর ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠেন খালেদা জিয়া। তারপর আদালতে যাবার প্রস্তুতি নেন। দোতলা থেকে নামার সময় নিজের চেম্বারের বাইরে অন্যান্য কক্ষগুলোর দিকে এক মুহূর্তের জন্য তাকান। এরপর দলের দুই নেত্রী সেলিমা রহমান ও শিরিন সুলতানাকে নিয়ে নিজের গাড়িতে গিয়ে উঠেন।

খালেদার জামিন: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আগামী ৫ মে এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পরবর্তী দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল রাজধানীর বকশিবাজার এলাকার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতের বিচারক আবু আহমেদ জমাদার রাষ্ট্র ও আসামি উভয়পক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। বিচারক তার বক্তব্যে বলেন, উনি একজন সম্মানিত মানুষ। সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তার জামিন বাতিল করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর কোনো ইচ্ছা আমাদের নেই। বিচারে সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে তিনি যদি নির্দোষ প্রমাণিত হন তাহলে তিনি খালাস পেতে পারেন। সাক্ষ্যগ্রহণের দিন হাজির না হওয়ায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াসহ কাজী সালিমুল হক কামাল ও শারফুদ্দিন আহমেদের জামিন বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এছাড়া ৪ মার্চ এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য থাকলেও খালেদা জিয়া হাজির হননি। গতকাল খালেদা জিয়ার সাথে মামলার অপর দু আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শারফুদ্দিন আহমেদকে তাদের আইনজীবীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পূর্ব শর্তে জামিন দিয়েছেন আদালত। খালেদা জিয়াসহ জামিন পাওয়া অন্য আসামিরা গতকাল আদালতে হাজির ছিলেন। এছাড়া অন্য দু আসামি মনিরুল ইসলাম খান ও জিয়াউর ইসলাম মুন্নাও আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কড়া নিরাপত্তায় আদালতে আসেন। এ সময় তার জন্য রক্ষিত নির্ধারিত চেয়ারে বসেন তিনি। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এজলাস কক্ষে তার আসন গ্রহণ করেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এ সময় মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালতের অনুমতি প্রার্থনা করেন। এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নাল আবেদিন, সানউল্লাহ মিয়া ও মাহবুব উদ্দিন খোকন বেগম জিয়ার জামিন আবেদনসহ দুটি আবেদন দাখিল করেন। মামলার অপর দু আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ও শারফুদ্দিন আহমেদের জামিনের জন্য তাদের নিজ নিজ আইনজীবীরা আবেদন পেশ করেন। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন তার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলী। আগের পূর্বতন তারিখে আদালতে খালেদা জিয়ার না আসার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, আমরা আজ তাকে হাজির করে তার জামিনের আবেদন করছি। এ সময় খালেদার অপর আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ শুনানিতে অংশ নিয়ে বলেন, খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আপনি (বিচারক) কোনভাবেই এটা মনে নেবেন না যে, উনি আপনাকে অবজ্ঞা করছেন। আমরাই তাকে আদালতে হাজির হওয়ার নিরাপত্তাজনিত বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছি। মওদুদ আহমদ বলেন, উনি যেহেতু আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আমরা আশা করবো আপনি আমাদের প্রার্থনা মঞ্জুর করবেন। জবাবে শুনানিতে অংশ নিয়ে মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, এই মামলার আসামিদের জামিন নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কখনই বিরোধিতা ছিল না। আইন যাতে তার নিজস্বগতিতে চলতে পারে সেজন্য খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিলো। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরাই মামলার কার্যক্রম বিঘ্নিত করা ও আদালতে তার উপস্থিতি থেকে তাকে বিরত রেখেছেন। এমনকি যখনই আমরা সাক্ষ্যগ্রহণের প্রস্তুতি নেই তখনই তারা বিভিন্ন দরখাস্ত দেন। কখনও আদালতের প্রতি আস্থা কখনও অনাস্থা জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কেন জারি করা হয়েছিল তা আমরা বলেছি। ওনার সম্মান আমাদের রক্ষা করতে হবে। এই মামলার আসামি তারেক রহমানের পক্ষে তার আইনজীবীরা প্রতিনিধিত্ব করেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষে তাদের কেউ প্রতিনিধিত্ব করেন না। এটা ঠিক নয়। শুনানিতে কাজল বলেন, আপনারা (খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা) বলছেন খালেদা জিয়া নিরাপত্তাজনিত কারণে এতদিন আদালতে উপস্থিত হননি। আবার আবেদনের মধ্যে উল্লেখ করেছেন যেহেতু এই মামলার বিষয় উচ্চ আদালতে বিচারাধীন সেহেতু গ্রেফতারি পরোয়ানা সঠিক হয়নি। আবেদনের এ লেখা পরিবর্তন করা দরকার। আপনারা আবেদন সংশোধন করে দেন। এসময় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আবেদনের লেখা সংশোধন করে পুনরায় তা আদালতে জমা দেন। একপর্যায়ে বিচারক বলেন, আমিও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার লক্ষ্য হবে এই মামলায় সুবিচার নিশ্চিত করা। ওনি একজন সম্মানিত ব্যক্তি, সম্মানিত ব্যক্তিত্ব। তার জামিন বাতিল করে তাকে জেলহাজতে পাঠানোর কোন ইচ্ছা আমাদের নেই। ফৌজদারি মামলায় দুটি বিষয় হলো, সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে বিচারে সাজা হয়। না হলে আসামি খালাস পেয়ে যায়। উনি যদি বিচারে সাক্ষ্য প্রমাণে নির্দোষ প্রমাণিত হন তখন তিনি খালাস পেতে পারেন। বিচারক বলেন, আজ যদি আসামিদের জামিন দেয়া হয় তাহলে অবশ্যই পরবর্তী ধার্য তারিখে তাদের হাজির হতে হবে। উনি যদি মামলার ধার্যকৃত প্রতি তারিখে উপস্থিত হয়ে বিচারকার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন তাহলে তা উত্তম হবে। একপর্যায়ে বিচারক আবু আহমেদ জমাদার পূর্ব শর্তে খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শারফুদ্দিন আহমেদের জামিন মঞ্জুর করে আগামী ২৬ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করলেও ২৮ এপ্রিল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী ৫ মে সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন। একই সাথে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এজে মোহাম্মদ আলীর করা মামলার নথিপত্রের সার্টিফাইড কপি পাওয়ার একটি আবেদন মঞ্জুর করে আদালতের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন।

আদালত থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, আদালতকে আমরা বলেছি আদালতে খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি নিরাপত্তাজনিত কারণে। আমাদের বক্তব্য শুনে আদালত খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেছেন। আরেকটি আবেদন ছিল আসামিপক্ষের এই মামলার নথিপত্র পাওয়ার প্রসঙ্গে। সেটিও আদালত মঞ্জুর করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যেসব অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে, এর কিছু কাগজপত্র এখনও আমাদের হাতে আসেনি। আদালত দুদককে ৫ মে’র মধ্যে সেসব কাগজপত্র আমাদের সরবরাহ করতে বলেছেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, তারা (আসামিপক্ষের আইনজীবীরা) জামিনের আবেদনে উল্লেখ করেছেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কোন বৈধতা নেই। আমরা এর বিরোধিতা করায়, প্রতিবাদ করায় লাইনটি কেটে দেয়া হয়। আদালত সবকিছু বিবেচনা করে খালেদা জিয়া ও অন্য দুইজনকে জামিন দিয়ে মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ই মে ধার্য করেছেন। তিনি বলেন, চার্জ ফ্রেমের (অভিযোগ গঠন) আগে মামলার নথিপত্রের সার্টিফায়েড কপি নেয়ার নিয়ম থাকলেও তারা তা নেননি।

এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে আসার সংবাদে বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত ও তার আশপাশ এলাকায় নেয়া হয় কয়েকস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বকশিবাজার এলাকায় ঢোকার কয়েকটি মুখে পুলিশ, ৱ্যাব, বিজিবির সদস্যরা ছিলেন সতর্কাবস্থায়। শাদা পোশাকে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ছিলেন তৎপর। এছাড়া, আদালতের ভেতর ও বাইরেও ছিলো নিরাপত্তাবাহিনীর সতর্কাবস্থা। এ সময় ওই এলাকায় যানচলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিচয়পত্র ছাড়া কাউকেই আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। আদালতে খালেদা জিয়ার অবস্থানকালিন সময়ে বিপুল সংখ্যক বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠ ও তার আশপাশ এলাকায় অবস্থান করে স্লোগান দেয়।