অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস বিএনপি ছাড়ছেন?

হাজতমুক্ত হওয়ার পরদিনই গুটিয়ে গেছে কেদারগঞ্জস্থ দলীয় কার্যালয়!

 

স্টাফ রিপোর্টার: অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস কি বিএনপি ছাড়ছেন? হাজতমুক্ত হওয়ার সপ্তা ঘুরতে না ঘুরতে এ প্রশ্ন দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে দানা বেধেছে। কেদারগঞ্জস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে সাইনবোর্ড নামানোর পাশাপাশি চেয়ার-টেবিল সরিয়ে নেয়া এবং নিজ বাড়ির বৈঠকখানায় দীর্ঘদিন ধরে ঝুলিয়ে রাখা বেগম খালেদা জিয়াসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ছবি সরিয়ে নেয়ায় দল ত্যাগ করছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়।

বিএনপি ছাড়ছেন কি-না- প্রশ্ন জোরদার হলেও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করে জবাব জানা সম্ভব হয়নি। দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারাও বলেছেন, হাজতমুক্ত হওয়ার পরদিন থেকে তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে তেমন দেখা করছেন না। বাড়ির বাইরেও পাওয়া যাচ্ছে না। দেখা করতে বাড়িতে গেলে তার ছেলে জাহিদ প্রায় সকলকেই ফিরিয়ে দিচ্ছেন। সে কারণে বিষয়টি দল ত্যাগ নিয়ে ওঠা প্রশ্ন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে গত ২৪ জানুয়ারি গ্রেফতার করে সদর সদর থানা পুলিশ। এর ৪ দিন আগে ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যার পর কোর্টপাড়ার ১ নং পানির ট্যাঙ্কের নিকট পুলিশের খাবার বহন করা গাড়িতে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। বোমা হামলায় পুলিশ পিকআপচালক পুলিশ সদস্য আহত হন। এ মামলায় অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। টানা ৫২ দিন হাজতবাস শেষে গত ১৭ মার্চ জামিনে মুক্ত হন তিনি। হাজতমুক্ত হলে দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। ওইদিন দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে কুশল বিনিময় ছাড়া তেমন কথা হয়নি। পরদিন থেকেই বদলে যাওয়ার বিষয়টি দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকের মাঝেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেগারগঞ্জ নতুন বাজারের একটি ঘর দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিলো। দলের শীর্ষ নেতা নেত্রীদের ছবিসহ চেয়ার-টেবিল ও টিভি ছিলো ওই কার্যালয়ে। অহিদুল ইসলাম বিশ্বাস হাজতমুক্ত হওয়ার পরদিনই দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ডটিই শুধু তুলে দেয়া হয়নি, চেয়ার-টেবিল ও টিভি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ছবিগুলো নাকি একটি গোডাউনে ঠাঁই পেয়েছে। একাধিকসূত্র এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, এটা প্রথম দিকে তেমন গুরুত্ব না পেলেও সময় গড়ানোর সাথে সাথে বেশ কিছু অসঙ্গতি অনেকের দৃষ্টিতেই ধরা পড়ে। দলীয় কার্যালয়ের পাশাপাশি অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসেরর নিজ বাড়ির বৈঠকখানায় রাখা ছবিটি সরিয়ে নেয়ায় অনেকেই হতবাকও হন। সেই সাথে দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকে দেখা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরলে নিজেদের মধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। গত দু দিন ধরে বিষয়টি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে ব্যাপক আলোচিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা বিএনপির দলীয় কার্যালয় এক সময় ছিলো জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক এমপি হাজি মোজাম্মেল হকের কোর্টপাড়াস্থ বাংলোতে। পরবর্তীতে বিএনপি একাধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়লে দুটি কার্যালয় চোখে পড়ে। এর একটি জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি সামসুজ্জামান দুদুর শেখপাড়াস্থ বাড়িতে অপরটি জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের বাড়ির অদূরবর্তী কেদারগঞ্জ নতুনবাজারের পাশে। এ কার্যালয়েই চলছিলো দলীয় কার্যক্রম। অহিদুল ইসলাম বিশ্বাসের জামিন মুক্ত হওয়ার পর দলীয় কার্যালয়টি বন্ধ হওয়ায় এখন অহিদুল ইসলামের দল ত্যাগের প্রশ্নটি অনেকেরই মুখে উচ্চারিত হচ্ছে। জবাব মিলছে না।

Leave a comment