কুষ্টিয়া শহরে ছুরিকাঘাতে শিবিরের নেতাসহ এক যুবতী গুরুতর জখম

ইমাম লজ নিয়ে জল্পনা কল্পনা : শিবিরের আস্তানা!

 

ষ্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া শহরের পূর্বমজমপুর এলাকায় ছুরিকাঘাতে শিবির নেতাসহ এক যুবতী গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ আহতের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতরা হলেন- কুষ্টিয়া খোকসা উপজেলার পশ্চিম আমলাবাড়ি এলাকার জামায়াতের নেতা আব্দুল্লাহর ছেলে ছাত্র শিবিরের চিহ্নিত ক্যাডার সিফাত উল্লাহ (২৬)। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামী স্টাডিস বিভাগের মার্স্টাসের ছাত্র। অপরজন হলেন রাজবাড়ির পাংশা উপজেলার রমজান আলীর মেয়ে সেলিনা খাতুন (২৩)। সেলিনা পাংশা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের দলিল লেখকের কাজ করেন।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, পূর্বমজমপুর এলাকায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদিস অ্যান্ড ইসলামী স্টাডিস বিভাগের শিক্ষক শফিকুল আলমের বাড়িতে বেশ কয়েক বছর ধরে ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা মেস করে থাকতো। সকাল-সন্ধ্যা গলিতে ওই বাড়ির নাম ইমাম লজ। তবে সম্প্রতি ওই মেসে ছাত্ররা কম থাকে। তবে কয়েকজনের ওই বাড়িতে যাতায়াত আছে। অনেকটা পরিত্যক্ত অবস্থায় বাড়িটিতে ছাত্রশিবিরের কর্মীরা যাতায়াত করে বলে জানা গেছে। সিফাত উল্লাহও ওই মেসে এক সময় থাকতো। গতকাল রোববার সকালে সিফাত উল্লাহ সেলিনাকে নিয়ে ওই মেসে যায়। বেলা সাড়ে এগারটার দিকে হঠাৎ করে সেলিনা চিৎকার দিয়ে বাড়ির গেট টপকে বাইরে চলে আসে। এ সময় তার সারা শরীরে রক্ত দেখা যায় এবং গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ দেখা যায়।

চম্পা খাতুন নামে এক কাজের মেয়ে বলেন, সেলিনার চিৎকার দিয়ে বলে, তাকে মেরে ফেলা হচ্ছিলো। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে সিফাত ও সেলিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়। এ সময় সিফাতের পরনে শুধুমাত্র আন্ডারওয়্যার ছিলো। ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম, কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রগাসক (সার্বিক) মুজিব উল ফেরদৌস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দীক, সোহেল রেজাসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা হাজির হন। একতলা ছাদের বাড়ির ঘরের মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো রক্ত। আসবাবপত্র ছড়ানো ছিলো। পুলিশ ঘরের ভেতর থেকে একটি রক্তমাখা ভোতা ছুরি, নারীদের অর্ন্তবাসসহ কনডম উদ্ধার করে।

কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে ইমাম লজ নামের বাড়ীটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বাড়ির ভেতরে তেমন কাউকে বের হতে বা ঢুকতে দেখা যেতো না। এলাকাবাসীর ধারণা বাড়ির ভেতরে শিবিরের কর্মীরা আস্তানা গেড়েছিলো।

গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সিফাতের বাবা জামায়াতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। সিফাতও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের রাজনীতি করে। কুষ্টিয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সোহেল রেজা জানান, সিফাতের মাথা, হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারারো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ দেখা গেছে। সেলিনার গলা কেটে গেছে। দুজনের শরীরে অস্ত্রপ্রচার করা হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সেলিনা কয়েক দিন আগে কুষ্টিয়ায় তার এক মামাতো বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসে। রোববার সকালে সে বাড়ি থেকে বের হয়। সিফাতের সাথে সেলিনার পূর্ব সর্ম্পক ছিলো। পূর্ব পরিচয় ধরে তারা দুজনই ওই বাড়িতে যায়। তাদের দুজনের মধ্যে কোনো ঘটনায় বা অন্য কেউ তাদেরকে জখম করে চলে যেতে পারে-এমনটিই ধারণা করা হচ্ছে।