খালেদার বক্তব্য নির্লজ্জ মিথ্যাচার : প্রত্যাহার চায় আ. লীগ

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এবং নাশকতার জন্য সরকারকে দায়ী করে খালেদা জিয়ার বক্তব্যকে নির্লজ্জ মিথ্যাচার আখ্যায়িত করে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পর ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ প্রতিক্রিয়া নিয়ে আসেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে তিনি (খালেদা) বললেন, সমস্যা শুরু হয়েছে দশম জাতীয় সংসদ নিয়ে। এ নির্বাচন তো নির্ধারিত ছিলো। কেন তিনি অংশগ্রহণ করেননি? এখন আবার তিনি বলছেন, প্রধানমন্ত্রী দ্রুত নির্বাচন দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। আপনাকে কোথায় কখন কবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছিলেন- জবাব দিন। তা না হলে এ রকম বানোয়াট জঘন্য মিথ্যাচার জনগণ সহ্য করবে না। বিএনপি চেয়ারপারসন তার সংবাদ সম্মেলনে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়ে বলেন, ওই মহা কারসাজির নির্বাচনী প্রহসনের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো যে, সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার স্বার্থে এটি একটি নিয়ম রক্ষার নির্বাচন।

আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে একটা সমঝোতা হলে সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন দেয়ারও অঙ্গীকার করেছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু যথারীতি তিনি তার সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছেন। আসলে প্রতিশ্রুতি রক্ষার কোনো দৃষ্টান্ত তাদের নেই।

বিএনপি নেত্রীর এ বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করে হানিফ বলেন, তিনি অনেকদিন অবরুদ্ধ নাটক করার পর যা করলেন, তা নির্লজ্জ মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। তার মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। পাশাপাশি দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে তিনি যেন তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন নেন। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন, দু মাস ধরে চলমান বিরোধী জোটের ডাকা অবরোধ ও হরতালে দলের নেতাকর্মীদের হয়রানির লক্ষ্যে সরকার পরিকল্পিতভাবে নাশকতার ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা হানিফ বলেন, তিনি (খালেদা) বলেছেন, সরকার নিজেদের লোক দিয়ে নাশকতা করছে- এটাও একটা নির্লজ্জ মিথ্যাচার। এ পর্যন্ত যতোজন হামলাকারী ধরা পড়েছে তাদের সবাই ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল- ছাত্রশিবিরের সদস্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হানিফ বলেন, নিজ দলের লোকজনের সৃষ্ট নাশকতায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের দায় অবশ্যই খালেদা জিয়াকে নিতে হবে। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যার জন্য তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। চলমান রাজনৈতিক সঙ্কটের জন্য সরকারকে দায়ী করে সমাধানের জন্য আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপারসন। এর জবাবে হানিফ বলেন, বিএনপি যা করছে, সেগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। আর সন্ত্রাসীদের সাথে তো সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না। দেশে কোনো সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট নেই। বরং পরিস্থিতির জন্য খালেদাকে দায়ী করে হানিফ বলেন, উনি (খালেদা) কর্মসূচি বন্ধ করলেই পারেন; উনি দেশের দু’বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। উনার কি কোনো দায়িত্ব নেই?

তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির পর গত ৬৭ দিনে বিএনপির ডাকা হরতাল-অবরোধে সহিংসতায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের দায় খালেদাকেই নিতে হবে। অন্যদের মধ্যে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।