নরেন্দ্র মোদীর চিঠি

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত্ করে মোদীর এই আমন্ত্রণ সম্বলিত একটি চিঠি হস্তান্তর করেছেন। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ঢাকা সফরের জন্য আমি আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি। আপনার ভারত সফরের জন্যও আমরা গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি। তার এই আমন্ত্রণের জবাবে জয়শঙ্করের কাছে শেখ হাসিনাও বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী কবে বাংলাদেশ সফর করবেন, আমরাও সেজন্য গভীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।

সংসদ অধিবেশনের মাগরিবের বিরতির সময় জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ে জয়শঙ্করের সাক্ষাত্কালে প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি মার্চেই ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাত্কালে ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো দিন-তারিখ উল্লেখ না করলেও তিনি বলেছেন খুব শিগগিরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে আসবেন। মোদীর বাংলাদেশ সফরের পরে সুবিধাজনক সময়ে শেখ হাসিনাও ভারত সফর করবেন বলে জানা গেছে। প্রায় ২০ মিনিটের এই সৌজন্য বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, বৈঠকে জয়শঙ্কর জানিয়েছেন-দুটি বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে শিগগিরই ভারতের প্রটোকল স্বাক্ষরিত হতে যাচ্ছে। একটি হলো ট্রেড প্রটোকল, অপরটি কোস্টাল শিপিং প্রটোকল।

জানা গেছে, কোস্টাল শিপিং চুক্তি হলে ভারতের দক্ষিণ থেকে মংলাবন্দর হয়ে বাংলাদেশ দিয়ে দু দেশের জাহাজ চলাচল করবে। তবে গতকালের এ বৈঠকে বহুল আলোচিত তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে কোনো কথা হয়নি।

শেখ হাসিনাকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব জানিয়েছেন, দু’দেশের মধ্যে গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে ভারত সরকার সন্তুষ্ট। এই অগ্রগতি আরো তরান্বিত হবে বলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কোস্টাল শিপিং প্রটোকল স্বাক্ষরসহ এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে দু’দেশের সম্পর্ক আরো টেকসই ও উন্নত হবে বলেও তারা একমত পোষণ করেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, বৈঠকে রামপাল বিদ্যুত্ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা হয়। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ভারত শুধু সার্ক ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না, এর বাইরেও দু’দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে আরো যা যা করা দরকার সেসব বিষয়েও পর্যায়ক্রমে কাজ করতে আগ্রহী। শেখ হাসিনা এসময় তাকে বাংলাদেশে আরো বেশি করে বিদ্যুত্ রপ্তানির অনুরোধ জানালে জয়শঙ্কর বলেন ‘সেটি অবশ্যই হবে-বাংলাদেশ আরো বেশি বিদ্যুত্ পাবে, রামপাল এর প্রথম উদ্যোগ’। জয়শঙ্কর তাকে জানান, ভারত ইতোমধ্যে ভুটান থেকে হাইড্রলিক বিদ্যুত আনার উদ্যোগ নিয়েছে। ভুটান যদি বেশি করে এই বিদ্যুত্ উত্পাদন করতে পারে, তাহলে সেখান থেকে বাংলাদেশও বিদ্যুত্ পেতে পারে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরো জানিয়েছেন, দু দেশের বেসরকারি খাতও বিভিন্নভাবে যৌথ উদ্যোগ নিতে পারে, যা দেশ দুটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমন্বিতভাবে ভূমিকা রাখবে।

স্পিকারের সাথে সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধির সাক্ষাৎ: সুইজারল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট স্টেট সেক্রেটারি জোহানেস ম্যাটিয়াসি জাতীয় সংসদের স্পিকার সিপিএ চেয়ারপারসন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সাথে গতকাল তার কার্যালয়ে সাক্ষাত্ করেছেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান এমফস এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জোহানেস ম্যাটিয়াসি স্পিকারকে সিপিএর নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ায় অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তরুণরা শক্তির আধার। যেকোনো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তরুণ প্রজন্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জবাবে স্পিকার বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ তরুণ। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ মানব-সম্পদে পরিণত করা সম্ভব।

Modi 1