বিডিআর বিদ্রোহের ষষ্ঠ বার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার: আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ বিডিআর (তত্কালীন) বিদ্রোহের ৬ বছর পূর্ণ হলো। ২০০৯ সালের এদিনে তখনকার বাংলাদেশ রাইফেলস- বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি-বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিপথগামী সদস্যরা বিদ্রোহ করে। এ সময় তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিজিবির সদর দফতর পিলখানায় সেদিন বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা যে তাণ্ডব চালিয়েছিলো, তা পৃথিবীর কোনো বাহিনীর বিদ্রোহের ইতিহাসে পাওয়া যায় না। বিদ্রোহীদের হাতে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও নিহত হন। বিদ্রোহীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি মহাপরিচালকের স্ত্রী, বাসার কাজের মেয়ে ও বেড়াতে আসা আত্মীয়রাও।

সিপাহি সেলিম রেজা, কাজল আলী, আবদুল বাছেত, শামীম আল মামুন জুয়েল ও ল্যান্স নায়েক ইকরামসহ ঘাতকদের তাণ্ডবে সেনা পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজার হাজার সাধারণ বিডিআর সদস্যের পরিবার। নির্মম এ হত্যাকাণ্ডের মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৬১ জনকে যাবজ্জীবন ও বিভিন্ন মেয়াদে ২৬২ জনকে সাজা দেয়া হয়। বিদ্রোহীদের বিচার, সংশ্লিষ্টদের সাহায্য-সহযোগিতার পরও স্বজনহারাদের কান্না থামেনি আজও। তবে কলংকিত সেই ইতিহাস ও ক্ষত ভুলে ঘুরে দাঁড়ানোর নিরন্তর প্রচেষ্টা সবার মাঝেই আজ বিদ্যমান।

ইতোমধ্যে মর্মান্তিক এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ হাজার সদস্যকে সাজাসহ চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আর লঘুদণ্ড পাওয়া ৮ হাজার সদস্যকে চাকরিতে বহাল রাখা হয়েছে। বিভীষিকাময় ঐ ঘটনার ৬ বছর পরে বাহিনীতে সম্পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে বলে ইত্তেফাকের কাছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানিয়েছেন। তিনি গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, ঐ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় ইতোমধ্যে বিচারের রায় হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথরেফারেন্সের শুনানি চলছে।

কর্মসূচি: বেদনাবিধুর এ দিবসটি পালনের লক্ষ্যে বিজিবি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠনও নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী শহীদ ব্যক্তিবর্গের রুহের মাগফিরাতের উদ্দেশে পিলখানাসহ বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিটের ব্যবস্থাপনায় বাদ ফজর খতমে কোরআন এবং বিজিবির সব মসজিদে এবং বিওপি পর্যায়ে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় সকাল ৯টায় বনানী সামরিক কবরস্থানে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর প্রতিনিধি, তিন বাহিনীর প্রধানগণ (সম্মিলিতভাবে), স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিজিবি মহাপরিচালক (একত্রে) শহীদদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় পিলখানার বীর-উত্তম ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে (সাবেক দরবার হল) মরহুমদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।