চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশে বসন্ত উৎসব : নেচে গেয়ে কবিতা আবৃত্তিতে বসন্তবরণ

স্টাফ রিপোর্টার: দখিনা হাওয়ায় দোল জাগিয়ে এলো বসন্ত। বসন্ত ঋতুরাজ। প্রকৃতির পালাবদলে ঋতুরাজ বসন্তের আগমনের দিন ছিলো গতকাল শুক্রবার। এদিনে চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের অধিকাংশ স্থানেই বসন্ত বরণের আয়োজন করা হয়। আয়োজনের আঁচ পড়ে প্রায় সর্বত্র। শহরজুড়ে বয়ে যায় যেন আনন্দের হিল্লোল।

এ উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গায় বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে শোভাযাত্রা, আবৃত্তি, নৃত্য, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে শোভাযাত্র চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এর আগে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়র্দ্দার টোটন বসন্ত বরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠন, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, উদীচী ও আবৃত্তি পর্ষদ চুয়াডাঙ্গার আয়োজনে বসন্ত বরণ অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আদিল হোসেন, আফিয়া আনজুমা প্রাচী, সানিয়া মাহাজেবিন প্রমুখ। ছড়া-কবিতা আবৃত্তি করে আবৃত্তি পর্ষদের জুনায়েদ, অধরা, জাবিবা, তাহিয়া, কোয়েল, ফাইম, রাই, প্রাচী, শাওন ও সেলিম। সন্ধ্যায় আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, অরিন্দম সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মোমিন, সংলাপ সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর সভাপতি মনিরুজ্জামান, উদীচী চুয়াডাঙ্গার সভাপতি নওশের আলী ও আবৃত্তি পর্ষদের সভাপতি সরদার আলী হোসেন। এছাড়া ঢাকার টিএসসি, বাংলা একাডেমী আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ধানমণ্ডি লেক, বলধা গার্ডেনসহ বিভিন্ন জায়গা মাতিয়ে রেখেছে সারাদিন। দিনভর চলেছে বসন্তের উচ্ছ্বাস প্রকাশ।

উল্লেখ্য, বাংলায় বসন্ত উৎসব এখন প্রাণের উৎসবে পরিণত হলেও এর শুরুর একটা ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে, যা হয়তো অনেকের অজানা। মোগল সম্রাট আকবর প্রথম বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন ১৫৮৫ সালে। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব। তখন অবশ্য ঋতুর নাম এবং উৎসবের ধরনটা এখনকার মতো ছিলো না। কিন্তু অন্য ঋতুর চেয়ে এ ঋতুকে পালন করা হতো আলাদাভাবে। তাই পয়লা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব কেবল উৎসবে মেতে ওঠার সময় নয়। এর সাথে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য, বাঙালিসত্তা। সে ঐতিহ্যের ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারলেই বসন্ত উৎসবের সাথে সাথে নতুন প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে পারবে বাঙালি চেতনাকে। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম বসন্ত উৎসব উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে।

Leave a comment