খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু

স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে ১১ দিন পর গুলশানে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মোবাইলফোন নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ওই কার্যালয়ের ইন্টারনেট, ওয়াইম্যাক্স সেবা, ডিশলাইন কাটা আছে। একই সাথে আশপাশের বাসা ও কয়েকটি দূতাবাসে এখনও ইন্টারনেট ও ওয়াইম্যাক্স সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পুরো কূটনৈতিক পাড়াতেই এখন মোবাইলফোনসহ সব ধরনের সেবা সচল আছে। এর আগে ৩০ জানুয়ারি রাতে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের বিদ্যুত লাইন কেটে দেয় ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্তৃপক্ষ (ডেসকো)। তবে ১৯ ঘণ্টা পর বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হয়। এরপর থেকে একনাগাড়ে ইন্টারনেট, ওয়াইম্যাক্স, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন অব্যাহত ছিল। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, সরকারের নির্দেশে ৩১ জানুয়ারি শনিবার সকালের দিকে পর্যায়ক্রমে মোবাইল, ইন্টারনেট, ওয়াইম্যাক্স এবং ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। একইভাবে মঙ্গলবার সরকারের নির্দেশেই মোবাইল সংযোগ চালু করা হয়েছে। ইন্টারনেট, ওয়াইম্যাক্স ও ডিশ সংযোগ চালুর ব্যাপারে কোনো নির্দশনা নেই বলেও তিনি জানান। তবে বিটিআরসির অপর একটি সূত্র জানায়, গ্রামীণফোনের টাওয়ারে জ্যামার বসিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করায় ওই ভবনের আশপাশের কয়েকটি বিদেশী দূতাবাসের মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ বিষয়ে তিনটি দূতাবাসের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায় স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও জাপান দূতাবাসের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়, খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করায় ওই কার্যালয়ের পাশেই অবস্থিত হওয়ার কারণে তাদের দূতাবাসে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগটি বিটিআরসিকে জানানো হয়। ওই সূত্র দাবি করে, মূলত এ কারণেই বিকল্প কোনো পন্থা না থাকায় দূতাবাসের নেটওয়ার্ক সচল করতে গিয়ে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়েরও মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করতে হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়সংলগ্ন মোবাইল ফোনের বিটিএসগুলো (ভয়েস ডাটা সার্ভিস) আবার সচল হওয়ায় গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, এয়ারটেল, টেলিটকসহ সব মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক চালু হয়েছে। তবে ব্রডব্যান্ড ও ওয়াইম্যাক্স লাইন বিচ্ছিন্ন থাকায় এখন শুধু খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে। মডেমের মাধ্যমে সেখান থেকে কিউবি, বাংলালায়ন এবং ওলোর নেটওয়ার্কও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এছাড়া ক্যাবল লাইন বিচ্ছিন্ন থাকায় ওই কার্যালয়ে ডিশ সংযোগও নেই।

৩০ জানুয়ারি শুক্রবার রাত ২টা ৩৭ মিনিটে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষের (ডেসকো) একজন লাইনম্যান খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ের বিদ্যুৎ কেটে দেয়। পরে শনিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ডেসকো বিদ্যুতের পুনঃসংযোগ দেয়। রাতে বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার পর মুহূর্তেই এ কার্যালয়জুড়ে অন্ধকার নেমে আসে। দিনের আলোতে তেমন সমস্যা না হলেও সন্ধ্যায় অন্ধকার নামলে বিপত্তি দেখা দেয়। ওই সময় জেনারেটর বন্ধ থাকায় মোমবাতির আলোয় অন্ধকার তাড়ানোর চেষ্টা চলে। সর্বশেষ রাত ৯টা ৫০ মিনিটে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হলে কার্যালয়ের সব আলো জ্বলে ওঠে।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল হলেও এখন পর্যন্ত ক্যাবল টিভির লাইন (ডিশ লাইন), ওয়াইম্যাক্স নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন আছে। ডিশ সংযোগ না থাকায় টেলিভিশনের কোনো অনুষ্ঠান ও খবর তারা দেখতে পারছেন না। একই দিকে ইন্টারনেট না থাকায়ও তাদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।