ইবি প্রতিনিধি: গত ৩ বছরেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নিখোঁজ দু ছাত্র ওয়ালিউল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে সাভারের নবীননগরে তাদেরকে র্যাব-৪ পরিচয়ে কতিপয় ব্যক্তি তাদের অপহরণ করে। এরপর থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছেন। আজ ৪ ফেব্রুয়ারি এ দু ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার তিন বছর পূর্ণ হবে। তবে র্যাব তাদের অপহরণের কথা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। ওয়ালিউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রশিবিরের কোষাধ্যক্ষ ও আল মুকাদ্দাস সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়, সহপাঠী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনে (ঢাকা-ঝিনাইদহ ৩৭৫০, আসন নম্বর- সি-১ ও সি-২) করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ওয়ালিউললাহ ও আল ফিকহ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র আল মুকাদ্দাস। গাড়িটি সাভারের নবীননগরে এসে পৌছালে র্যাব-৪ এর ১০/১৫ জন্য সদস্য গাড়ি থামিয়ে তাদরকে অপহরণ করে। এরপর থেকে তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে র্যাব-৪ বরাবরই অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে। নিখোঁজ দু ছাত্রের সন্ধান চেয়ে ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মুকাদ্দাসের চাচাতো ভাই আবদুল হাই ও ওয়ালিউল্লাহর ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ হাইকোর্টে দুটি রিট করেন। আদালত ওইদিন রিটের শুনানি শেষে নিখোঁজ দুই ছাত্রকে সশরীরে আদালতে হাজির করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পাশাপাশি তারা আটক হয়ে থাকলে তাও কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়টিও জানাতে বলা হয়। ১৬ মে তৎকালীন পুলিশের আইজিপিকে আদালতে হাজির হয়ে দু ছাত্র নিখোঁজের বিষয়টি তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বলা হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন করলে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ মে আপিল বিভাগ আইজিপিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য হাইকোর্টের দেয়া আদেশ চার সপ্তার জন্য স্থগিত করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিখোঁজ ছাত্রদের ব্যাপারে কোনো সন্ধান দিতে পারেনি। ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নিখোঁজ দু ছাত্রের সন্ধান না পাওয়ায় ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল একটি বিবৃতি প্রদান করে।
নিখোঁজ শিবির নেতা আল-মুকাদ্দাস পিরোজপুর জেলার সদর থানার ২ নং কদমতলি ইউনিয়নের খানাকুনিয়ারী গ্রামের মাওলানা আব্দুল হালিমের বড় সন্তান। ওয়ালীউল্লাহ ঝালকাঠি জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলার সোলজালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোলজালিয়া গ্রামের মাওলানা ফজলুর রহমানের ছেলে।